আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় করোনায় মৃত্যুহার টিকা গ্রহণকারীদের চেয়ে যারা টিকা নেয়নি তাদের তিনগুণ বেশি।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন তথ্য দিয়েছে।
যারা টিকা নেয়নি তাদের মৃত্যুহার ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু সেই তুলনায় যারা সিনোভ্যাক কিংবা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন, তাদের মৃত্যুহার চার দশমিক এক শতাংশ।
গত মে থেকে জুলাই পর্যন্ত ৬৮ হাজার রোগীর তথ্য বিশ্লেষণে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সম্প্রতি ব্যাপকহারে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। বুধবার (৪ আগস্ট) আক্রান্তের এক নির্মম মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া। এদিন এক লাখেরও বেশি মানুষ কারোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
আণবিক জীববিজ্ঞানী ডা. ইনেস আটমোসুকার্তো বলেন, বিশ্বে টিকাগ্রহণকারী ও যারা গ্রহণ করেনি তাদের তথ্য সহজলভ্য না। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার এই তথ্য বলে দিচ্ছে যে টিকা গ্রহণের গুরুত্বটা কত বেশি।
টিকার দুই ডোজে করোনায় মৃত্যু শঙ্কা কমিয়ে আনার ধারণাকে সমর্থন দিচ্ছে এই তথ্য। এতে করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরিমাণও কমে আসে।
তবে ইন্দোনেশিয়ার এই তথ্যে করোনা রোগীদের আগে থেকে অসুস্থতা (কোমরবিডিটি), বয়স ও পর্যবেক্ষণের সময়সীমার কথা বলা হয়নি। জাভা দ্বীপের বানিয়ুওয়াঙ্গি শহরের উপাত্ত বলছে, গত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯৩ শতাংশ করোনা রোগীর টিকা নেওয়া হয়নি। ছয় শতাংশ প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন।
আর এক শতাংশ সম্পূর্ণ টিকা নিয়েছিলেন। এসব এলাকায় সিনোভ্যাক ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিথি নাদিয়া তারমিজি বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় টিকা নিতে অনাগ্রহ দূর করতে এই তথ্য সহায়তা করবে।
দেশটিতে ১৮ শতাংশ মানুষ টিকার এক ডোজ নিয়েছেন। আর আট শতাংশকে দুডোজই দেওয়া হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত করোনায় এক লাখ ৬০০ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে।
সেই তুলনায় ভারতের জনসংখ্যার ২৭ দশমিক ৭ শতাংশকে টিকার এক ডোজ ও সাত দশমিক আট শতাংশকে দুডোজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেশটিতে মারা গেছেন চার লাখ ২৫ হাজার ৭০০ জন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গেল ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার (৪ আগস্ট) দেশটিতে এক লাখের বেশি লোকের করোনা পজিটিভ এসেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের টালি বলছে, করোনার টিকা নেওয়া কম হয়েছে এমন এলাকাগুলোতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রে গত সাতদিন ধরে গড়ে ৯৪ হাজার ৮১৯ জন করে মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা পাঁচ গুণ বেড়েছে।
বুধবার রয়টার্সের উপাত্ত সেই কথাই বলছে। গত সাত দিনের গড় করোনা সংক্রমণ বলে দিচ্ছে, কীভাবে মহামারি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।
বুধবার মার্কিন শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, আসছে সপ্তাহগুলোতে দিনে করোনা সংক্রমণ দ্বিগুণ বেড়ে দুই লাখ হয়ে যেতে পারে। যদি অতিমাত্রায় সংক্রমণে সক্ষম আরেকটি ধরন এসে পড়ে, তবে পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে খারাপ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, যারা ভুলভশত টিকা নিতে পারেননি, তারা হয়তো ভেবেছেন, এটা তাদের ব্যাপার। তা কিন্তু না। এটি সবার ব্যাপার।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রথম ভারতে শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করোনা সংক্রমণের ৮৩ শতাংশের জন্য দায়ী এই ধরন।
-এটি