নুরুদ্দীন তাসলিম।।
হজের আনুষ্ঠানিকতার ধারাবাহিকতায় আজ হাজিরা মিনায় পৌছবেন। আগামীকাল সোমবার (১৯ জুলাই) হজের অন্যতম রোকন আরাফায় অবস্থানের দিন। এই সময় হাজিরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করবেন।
বৈশ্বিক মহামারী করোনার কামধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো হজ পালন করছেন হাজিরা। এবছর ৬০ হাজার সৌদি নাগরিক ও সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রবাসীরা হজ করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন।
মক্কা মুকাররমায় আসার আগে হাজিদের ৬ হাজার জন করে কাফেলা বানানো হয়েছে। যারা প্রত্যেক ৩ ঘণ্টা পরপর মসজিদুল হারামে তাওয়াফের জন্য প্রবেশ করছেন। মসজিদুল হারামের দরজা গুলোতে ৭০’র বেশি তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হাজীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য মক্কা মুকাররমায় ১০ টি হাসপাতাল ও ৮২ টি মেডিকেল সেন্টার কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছেন সৌদি সরকার।
সমস্ত হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টারে কোভিড ১৯ ও অন্য সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর মাত্র ৬০ হাজার হজযাত্রীর অংশগ্রহণে হজ পালিত হবে। মূলত ৮ জিলহজ ফজরের নামাজের পর থেকেই ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ করতে করতে হাজীদের মিনার তাঁবুতে গিয়ে অবস্থান করার নিয়ম। সে হিসাবে হজের দিনগুলোর সূচনা আজ থেকেই।
নির্ধারিত স্থান (মিকাত) থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় অবস্থান করেই হাজীরা হজের সব করণীয় সম্পন্ন করবেন। সেখান থেকেই কাল আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে রওনা হবেন। দিন শেষে আরাফাতের ময়দান থেকে ফেরার পথে মুজদালিফায় রাত যাপন করে ১০ জিলহজ মঙ্গলবার সকালে আবার মিনার তাঁবুতে ফিরবেন। সেখান থেকে গিয়েই জামারাহতে শয়তানের প্রতি প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন। পশু কোরবানি করবেন এবং তাওয়াফে জিয়ারাহ, সাফা মারওয়া সাঈ করে আবার মিনার তাঁবুতে ফিরে আসবেন। পরের দুই দিনও একইভাবে মিনার তাঁবু থেকে গিয়ে জামারায় পাথর নিক্ষেপ করবেন। ১২ অথবা ১৩ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ শেষ করে হাজীরা মিনার তাঁবু ত্যাগ করে হজের কর্তব্যের সমাপ্তি ঘটাবেন। এরপর মক্কা ত্যাগ করার আগে বিদায়ী তওয়াফ করে যে যার অবস্থানে চলে যাবেন।
মিনার তাঁবুতে হাজীরা ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ তথা তালবিয়া পাঠ ছাড়াও ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন। হজের মাসলা মাসায়েল নিয়ে নিজেরা আলোচনা করেন। আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে মুনাজাত করেন।
কাল মিনা থেকে হাজীরা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে অবস্থান নেবেন। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের অন্যতম ফরজ। এখানে কেউ অবস্থান না করলে তার হজ আদায় হবে না।
৯ জিলহজ ফজরের নামাজ পড়ে হাজীদের আরাফাতের উদ্দেশে রওনা দেয়ার নিয়ম। মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানের দূরত্ব ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার। অনেকে হেঁটে আরাফাতের দিকে রওনা হন। দুপুরের আগেই হাজীরা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে অবস্থান নেন। আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরাহ থেকে গ্র্যান্ড মুফতি জোহরের ওয়াক্ত শুরু হলেই খোতবা দেবেন। সেখানে জোহর ও আসরের নামাজের পরপর জামাত হবে। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত ওই ময়দানে অবস্থান করে হাজীরা আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করে কান্নাকাটি করে কাটাবেন। সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ময়দান ত্যাগ শুরু করবেন। মিনায় ফেরার পথে মাঝে মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করবেন। ১০ জিলহজ সকালে ওই ময়দান ত্যাগ করে মিনায় ফিরবেন।
এনটি