আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: লকডাউন শিথিল হওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার থেকে ৩৮টি আন্তঃনগর এবং ১৯টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মঙ্গলবার বিকাল থেকে শুধুমাত্র অনলাইনে টিকেট বিক্রি শুরু হবে। বিকাল কয়টা থেকে টিকেট পাওয়া যাবে তা পরে জানানো হবে’।
পরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ফেসবুক পেজে জানানো হয়, মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। কিন্তু বিকাল ৫টার পর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টিকিটের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপস দিয়ে প্রবেশের পর দেখানো হচ্ছে “নো ট্রেন ফাউন্ড”। সন্ধ্যা ৭টার পর ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপসে আর প্রবেশই করা যাচ্ছে না।
রাত ৮টার পর ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপসে ঢুকা গেলেও ‘নো ট্রেন ফাউন্ড’ লেখা আসছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রেলওয়ের ৩৬২টি ট্রেনের মধ্যে স্বাভাবিক সময়ে ১০২টি আন্তঃনগর ট্রেন এবং ২৬০টি লোকাল, কমিউটার ট্রেন ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে।
কুরবানির ঈদ সামনে রেখে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সকল বিধিনিষেধ শিথিল করে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এই সময়ে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করবে বলে সোমবার রাতেই জানিয়েছিল রেলপথ মন্ত্রণালয়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২২ জুন যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর ১ জুলাই শুরু হয়েছিল সর্বাত্মক লকডাউন, যার মেয়াদ ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত।
ঈদের ছুটির পর ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ অগাস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত আগের বিধিনিষেধগুলো আবারও কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
যা বলছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ
এ ব্যাপারে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিঃ মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, বিকাল ৫টা থেকে টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছিল বিকালে শুরু হবে। কিন্তু কখন শুরু হবে তা বলতে পারছি না। সন্ধ্যা ৭টা অথবা সাড়ে ৭টার পর হতে পারে।
হঠাৎ করে এমন একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। কাজ করতে করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা ধরে নিচ্ছি ৭টা সাড়ে ৭টার দিকে হবে। কিন্তু ৫টার সময় যে হবে তা আমরা অফিসিয়ালি ডিক্লেয়ার করিনি। কিন্তু আমরা আজকে চেষ্টা করতেছি। কাজ করছি, কাজ হচ্ছে।
ট্রেনের টিকিট ভোগান্তিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ
টিকিট কিনতে গিয়ে বারবার সার্ভার না পাওয়া অথবা সার্ভারে অনেক চেষ্টার পর ঢুকে নো ট্রেন ফাউন্ড লেখা দেখে চরম হতাশ হয়েছেন ট্রেনে গমণেচ্ছু যাত্রীরা। এ নিয়ে তারা ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সজল নামের একজন ফেসবুক কমেন্টে লেখেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এবং রেল মন্ত্রী মহাদয় সাহেব আপনাদের নিকট অনুরোধ, আপনারা জনগণের কথা চিন্তা করুন, দেশের মানুষ যেন অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারে সে বিষয়ে লক্ষ রাখুন, আমরা দেখি যে অনলাইনে টিকিট কালোবাজিরা আগেই উধাও করে দেয়। সেটি যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এতো দুর্নীতি কোথায় রাখবো বিকাল ৫টা থেকে ট্রাই করছি। লোডিং......। আগেরবারও একই কাহিনী হয়েছিল। এখন কাউন্টারে গিয়ে দেখবেন টিকিট নাই, পাশে কেউ ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি শুরু করবে।
রাইহান নামের একজন ফেসবুক কমেন্টে লেখেন, CNS এর মতো বাজে অপারেটর যতদিন থাকবে ততদিন লোডিং থেকে মুক্তি নাই! ট্রেন সেক্টরকে গিলে খেয়ে ফেলতেছে এরা।
আইয়ুব নামের একজন লেখেছেন, রেল সেবা এপস ও ই-সেবা দুইটি লিংকই ৫টা বাজার সাথে সাথে ব্লক হয়ে গেল, টিকেট কি এলিয়েন ছাড়া আর কারো কপালে জুটবে?
ফরিদ উদ্দিন নামের একজন লেখেন, টিকিট যদি বিক্রি না করেন তাহলে বলে দেন একটা নোটিশ দিয়ে। অযথা মানুষকে হয়রানি করে কী লাভ? আর যদি শুধু ভিআইপিদের ট্রেনে নিতে চান,ওটাও বলেন। বাংলার মানুষ অনেক ভালো, আপনাদের কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেবে না।
আনোয়ারুল মজিদ নাহিদ নিজের ভোগান্তি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সব টিকেট ব্ল্যাকে (কালোবাজারিতে) চলে যাবে। ট্রেনের অসাধু কর্মকর্তারা সেটা ৪ গুণ দামে বিক্রি করবে। এ দেশে ভালো কিছু আশা করা বোকামি।
এনটি