আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে স্বাধীনতাকমীদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন স্বাধীনতাকামী এবং একজন ভারতীয় সেনা।
শুক্রবার উপত্যকার পুলওয়ামা জেলার রাজপোড়া অঞ্চলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এনিয়ে কাশ্মীরে গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা সংঘাতে মোট ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছে উপত্যকায় কর্মরত ভারতীয় পুলিশ।
ভারতের দাবি, নিহত হওয়া স্বাধীনতাকামী পাঁচজন পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যবার সদস্য। এর আগে গত ১ জুলাই রাতে রাজপোড়া এলাকায় যৌথ অভিযান শুরু করে ভারতীয় বাহিনী। এ অভিযানে নিহত হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সদস্য ও পাঁচ সশস্ত্র যোদ্ধা।
এর আগে গত ২৪ জুন দিল্লিতে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক করেন উপত্যকার নেতারা। সেখানে কাশ্মীরকে ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের প্রায় দুই বছর পর এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। তবে কখন মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হবে তা খোলাসা করেননি নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, উপযুক্ত সময়ে তা ফিরিয়ে দেয়া হবে।
তিন ঘণ্টার এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আটটি দলের ১৪ জন নেতা। ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও লেফটন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা। কাশ্মীরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি।
বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন,তাদের মোট পাঁচটি দাবি ছিল। অবিলম্বে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিধানসভা নির্বাচন দিতে হবে, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে ও আধিপত্য আইনে বদল আনতে হবে।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে। কাশ্মীরের জনগণ তাদের বিশেষ মর্যাদার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে লড়াই চালিয়ে যাবেন, তাতে যত সময় লাগুক।
২০১৯ সালের আগস্টে ভারত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে। ফলে কাশ্মীর এতদিন যে বিশেষ অধিকার পেত তা খারিজ হয়ে যায়। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যটিকে ভেঙে দুইটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। এর একটি হলো লাদাখ এবং অপরটি জম্মু-কাশ্মীর।
সূত্র: ডন, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
এনটি