শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস

আলোর নবি মুহাম্মাদে আরাবি সা.

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ আবুল খায়ের গৌহরী।।

সত্যর আলো ছড়াতে,পূণ্যের পথ দেখাতে, পথহারা জাতিকে পথে ফিরিয়ে আনতে, সমগ্র বিশ্বকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে, নিষ্টুরতার লাগাম টেনে ধরতে,অশ্লীলতাকে চিরতরে সমাহিত করতে, অন্যায়-অবিচারকে খতম করতে, বিপুল শক্তির অধিকারী ও পরাক্রমশালীদের দাপট খণ্ডিত করতে, কৌশল ও শক্তিমত্তার অধিকারীদের মধ্যে আল্লাহর দাসত্বের অসহায়ত্ব ও বিনয় সৃষ্টি করার লক্ষ্যে,জনবল-ধনবলহীন,সৈন্য-সামন্তহীন,পিতৃস্নেহ বঞ্চিত, অসহায় মায়াহারা এতিমের আবির্ভাব হলো।

তারঁ শুভ দর্শনে যাদের চক্ষু শীতল হলো, বক্ষ যাদের ঠান্ডা হলো, হৃদয় যাদের আলোকিত হলো, দুনিয়াতে আসা তাদের সার্থক হলো,জীবন তাদের সাফল্য-মণ্ডিত হলো। এ মহামানবের যারা দেখা পেলো, সোনার মানবে পরিণত হলো। এ ফুলের সুবাসে যারা সুবাসিত হলো, সুরভিত গোলাপে রূপান্তরিত হলো।

আত্মিক মৃত্যুর কোলে ঘুমিয়ে পড়া হে আরব জাতি! ইতিহাস জানো তো! তোমরা ছিলে হেদায়তের আলো থেকে বঞ্চিত। ছিলে গোমরাহির কালো চাদরে ঢাকা। অন্যায়-অনাচার, পাপাচার-নাফর-মানি,খোদাদ্রোহিতা,ধ্বংসাত্মকঅপকর্মে লিপ্ত। আল্লাহ -রাসূল বিস্মৃত।

চিন্তাগত বিভ্রান্তি, আকিদাগত বিপর্যয়, জ্ঞানগত সন্দেহ, চারিত্রিক দুর্বলতা, আমলগত উদাসীনতা, ত্রুটি বিচ্যুতি,মূর্খতা ও অজ্ঞতা তোমাদেরকে মনুষ্যত্ব থেকে পশুত্বে রূপান্তরিত করেছিলো।

সততা-ন্যায়-নিষ্ঠা,পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা, সুকুমারবৃত্তি, সচ্চরিত্র, ন্যায় ও হকের উপর দৃঢ়তা ও অবিচলতা থেকে ছিলে দূরে।
ছিলে সহানুভূতি, মহানুভবতা, সহমর্মিতা, সংবেদনশীলতা, ধীরতা-স্থীরতা, বিনয়-নম্রতা, অন্তরের পরিশুদ্ধি,তাকওয়া-পরহেযগারী, দায়িত্ব ও সচেনতা থেকে বহু দূরে।

বলো তো-তোমরা রাসূল সা.-এর পরশ-সৌভাগ্য লাভ করলে কোন সে মহাপূণ্যে! আল্লাহর দাসত্বের অসহায়ত্ব ও বিনয় সৃষ্টি হলো তোমাদের মাঝে কোন সে মহাগুণে! পৃথিবীবাসী তো জানে -তোমাদের জীবন ছিলো মিথ্যা, অসত্য, অন্যায়, আত্মপ্রচার,রিয়া, প্রতারণা ও ঠকামির আচঁলে বাধাঁ।

রাহযানি,খুন-খারাবি, জুলুম-নির্যাতন,নিপীড়ন ছিলো তোমাদের পেশা। বিশ্বাস রক্ষা না করা, মদ-জোয়া ও ব্যভিচার ছিলো তোমাদের নেশা। জীবিত মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করে মারা,নারীর পেট এফোঁড়-ওফোড়ঁ করে ফেলা, নিস্পাপ শিশুদেরকে তরবারির আঘাতে দিখণ্ডিত করা ছিলো তোমাদের স্ফূর্তির ব্যাপার। অথচ সারা পৃথিবীতে আজ তোমাদের নাম-সুনাম,তোমাদেরই মান-সম্মান।

বলো না কোন সে যোগ্যতা লুকিয়ে ছিলো তোমাদের মাঝে? কোন সে সূর্য উদিত হয়েছিলো তোমাদের জীবনে? যার ফলে তোমরা নিজেরাই আলোকিত হলে। আর অপরকে আলোকিত করে চাঁদের মত করে তুললে আলোকোজ্জ্বল ও দীপ্তিমান। সময়ের এ সামান্য ব্যবধানে দিশেহারা থেকে হয়ে গেলে দিশারী।

কন্যা সন্তানের জ্যান্ত দাফনকারী এই তোমরাই কত মৃত মানুষের মাঝে সঞ্চার করলে জীবন -স্পন্দন! কত জীবনে আনলে আলোর ছোঁয়া। কত জীবন গড়ে তুললে রাসূল সা.এর আদর্শ ও সুন্নাতের উপর!

খেজুরের শহর হে মদীনা! তুমি পৃথিবীতে ছিলে এমন অজ্ঞাত ও অপরিচিত যে,কেউ তোমাকে চিনতো না, জানতো না। তোমাকে জানারও কারো আগ্রহ ছিলো না। অথচ সারা দুনিয়ার মানুষ আজ তোমার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে। তোমার ভালোবাসায় স্নিগ্ধ হতে চায় না কোন সে মন? তোমার ধূলো-বালির সুরমা মাখতে চায় না কোন সে মানুষ? তোমার সবুজ গম্বুজের জামাল ও সৌন্দর্যের নূরান্নিয়াত ও স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ হতে চায় না কোন সে হৃদয়?

রাসূলে আকরাম সা.এর পদধূলি, রাব্বুল আলামীনের তাজাল্লি তোমাকে করেছে ধন্য।তাই সারা দুনিয়ার মানুষ আজ তোমার দর্শনপিপাসু,আশীর্বাদের ভিখারী। সুতরাং পৃথিবীতে মাথা উঁচিয়ে রাখার ও গর্ব করার একমাত্রই তুমি।

অত্যাধুনিকতার আলোকোজ্জ্বল দুবাইয়ের হে আকাশচুম্বি টাওয়ার! কত সকাল-সন্ধ্যা ও কতো দিন-রাত হয়েছে তোমার কোলে! কত নারী-পুরুষ তোমার দর্শনের পিপাসু হয়ে, তোমার সুন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে এসেছে তোমার পানে! কিন্তু তুমি বলো-অসহায়,বে-সাহারা এতিমের সেই সুন্দর চেহারা কখনো দেখেছো তুমি! প্রিয় নবিজি সা.এর সেই নূরানী দীপ্তি কোথাও নজরে পড়েছে তোমার! তাহলে কী আছে তোমার গর্ব ও ফখর করার!

হে দুর্ভাগা মাতৃভূমি! আল্লাহর সীমাহীন দানে ও অফুরন্ত নিয়ামতে তুমি ধন্য। সোনারগাঁ, লালকেল্লা তোমার গর্ব, গফুরগাঁ তোমার ঐতিহ্য! শামসুল হক ফরিদপুরি, পীরজি, হাফেজ্জি, কাজি নজরুল, বঙ্গবীর উসমানি, বায়মপুরি, হরিপুরি তোমার মাটির সন্তান। আল্লাহর দয়ায় তুমি হয়েছ স্বাধীন। জালিমদের জুলুম থেকে পেয়েছো নিস্কৃতি। শত দেশের ক্ষুদ্র হলেও আল্লাহর দানে জনে-বলে তোমার কোন কমতি নেই।

কিন্তু রাসূলে আরবি সা.এর মুবারক কদমের স্পর্শ তোমার ভাগ্যে জুটলো না। আরব ভূমির মর্যাদা তুমি পেলে না। নূরে মুহাম্মদির তাজাল্লি ও হেরার আলোর ছোঁয়া আল্লাহ তোমাকে দিলেন না। মক্কা -মদীনার মান,কাবা-বায়তুল্লাহর সম্মান তোমার আর হলো না। তোমার দুর্ভাগ্য হে মাতৃভূমি! তোমার শত দুর্ভাগ্য!

হে দয়ার নবি সা.! আপনার জন্য উৎসর্গ হোক আমার জীবন-মরণ। আমার অশান্ত মন ও অস্থির হৃদয়ে তুমি সান্ত্বনার শীতল পরশ বুলাও। স্বপ্নের বাতায়ন পথে হলেও একবার নসীব করো আমাকে তোমার দীদার।

হে আমার প্রেমবৃক্ষ, বসন্তের স্নিগ্ধ সমীরণ! হে আমার ধ্যানের ছবি,হৃদয়ের আলোকরশ্মি! আমার হৃদয়ে তোমার প্রেমের তরঙ্গ জোয়ার। তোমার জন্য মন আমার অস্থির -বেকারার। অনুগ্রহ করে একবার হলেও তুমি আমাকে দেখা দাও!

হে নবি সা.! তোমার সান্নিধ্য যে একবারও লাভ করেছে, হৃদয় কুন্দরে তার সূচিত হয়েছে এক ইনকিলাব-সবুজ বিপ্লব। হৃদয়ে যার তোমার ভালোবাসার পরশ লেগেছে, দুনিয়ার সকল ভালোবাসা থেকে তার মুক্তি ঘটেছে।

তোমার পরশে পাথর দিল ও পাষাণ হৃদয় নাকি বিগলিত হতো। তাহলে আমার দিকে হোক না তোমার করুণা দৃষ্টি! তোমার মায়াভরা,স্নেহভরা, প্রেমময় দৃষ্টি লাভের আশায় দরজায় বারবার কড়া নাড়ছি আমি। তোমার ইজ্জতের দোহাই! তুমি বঞ্চিত করো না আমাকে।

লেখক: শিক্ষার্থী, মারকাযুদ্দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা। দাওরায়ে হাদিস, মাদরাসাতুল উলূম দারুল হাদীস হরিপুর,জৈন্তাপুর, সিলেট।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ