শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই

মদিনা আমার প্রেম!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ আবুল খায়ের গৌহরী।।

মদিনা থেকে দূরে বহুদূরে দূরের এক দেশে আমার জন্মভূমি। আমার হৃদয় ব্যাকুল আল্লাহর ঘরের দিদার পেতে, সোনার মদীনার পেয়ারা হাবিবের রাওযা যিয়ারত করতে, কালো গিলাফের সৌন্দর্যে এবং সবুজ গম্বুজের স্নিগ্ধতায় হৃদয়-প্রাণ শীতল করতে।

আমার মন অস্থির আলোর মিনার, মিনারের আলো দেখতে, সবুজের জান্নাত এবং জান্নাতের সবুজের সুবাস পেতে। দিল বেকেরার আমার মদীনার ধুলোবালির সুরমা মাখতে, মদীনার খেজুর বাগানের ছায়া পেতে, মদীনার জাবালে উহুদের একটুখানি ভালোবাসা নিতে এবং মসজিদুন নবীর মোবারক জামাতে শামিল হতে।

আমার যেতে ইচ্ছে করে হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা. এর ধুলোমাখা এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালামের স্মৃতিধন্য শহর সোনার মদীনায়, মদীনার সবুজ গম্বুজের ছায়া পেতে এবং সেই সবুজের জামাল-সৌন্দর্যের নূরান্নিয়াত ও স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ হতে আমার বড় শওক জাগে।
আমার ইচ্ছে করে সামান্য সময়ের জন্য হলেও সোনার মদীনার মানুষের সাথে কিছু অবস্থান করতে, মদীনার অলিতে-গলিতে ঘুরতে এবং মদীনার মাটি,মদীনার ধুলো ও মদীনার বাতাস গায়ে লাগাতে।

যেতে ইচ্ছে করে আমার সেই শহরে যারা বাসিন্দারা বরণ করেছিলো নবী সা.কে সুরের মালা দিয়ে "তালাআল বাদরু আলাইনা "গেয়ে গেয়ে,সেই শহরে যেখানে গেলে চোখ অশ্রু সিক্ত হয়, পাষাণ হৃদয় ও পাথর দিল বিগলিত হয়। যেখানে আসমান থেকে নূরের শিশির ঝরে, আর রহমতের করুণাধারা বর্ষিত হয়।

আমার বুকের ভিতর স্বপ্নের জোনাকিরা জ্বলছে, নিভছে। এক রকমের বিষন্নতা বিরাজ করছে আমার দেহে,অন্তরে, আমার সমগ্র অস্তিতে।

হায় দূর দেশ থেকে কত সাগর-মরুসাগর পাড়ি দিয়ে যদি আমি হাযির হতে পারতাম স্বপ্নের শহর সোনার মদীনায়!! আমার তো অনেক কিছু নিবেদন করার ছিলো! কিছু আকুতি,কিছু মিনতি, কিছু কষ্ট, কিছু ব্যথা। যদি জীবনের অশান্ত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে কিশতি তীরে এসে ভীড়তো? আমার জীবনের লালিত স্বপ্নের সবকটি ফুল একে একে প্রস্ফুটিত হতো? তাহলে তো হৃদয় জগতে এবং কলবের জাহানে অনেক কিছু হতো, আলোর বিচ্ছুরণ, নূরের উদ্ভাস,ফুলের সুবাস,একটু হাসির আভাস।

আমি যখন ভাবনায় হারিয়ে যাই তখন আমি আমাকে হারিয়ে ফেলি, হারিয়ে ফেলি আমি আমার সব অনূভব-অনূভতি।থাকে শুধু তখন একটা আকুতি! একটা মিনতি!যিয়ারতে মদীনার সৌভাগ্য যেন হয়। রাওযায়ে আতহারের দর্শন যেন লাভ হয়।

একদিন হঠাৎ করে আমি তন্ময় হলাম। তখন আমি দেখতে পেলাম- মসজিদুন্নবী ও রাওযাতুন্নবীর দৃশ্য। আমি একবার তাকাই মসজিদুন্নবীর দিকে,আরেকবার তাকাই রাওযাতুন্নবীর দিকে। তখন যেন আমি দেখতে পেলাম রাসূল সা.-র জামানার খেজুর পাতার মসজিদ। মসজিদের চারিদিকে যেন নূরের আলো, আলোর বন্দর। দুরু দুরু বুকে, কম্পিত হৃদয়ে আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম। দেখতে পেলাম নূর ও নূরান্নিয়াত ওয়ালা এক জামাত। মিম্বরে বসে আছেন একজন সুদর্শন পুরুষ। মুখে তাঁর নূরের আভাস, উপস্থিত সবাইকে খেতাব করছেন তিনি। বাহ কী চমৎকার বক্তৃতা! আর কী মুবারক জামাত!!

তারপর তাকিয়ে রইলাম আলোর মিনারের দিকে। এমনি ভেসে এলো আজানের সু-মধুর ধ্বনি। যেন হযরত বিলালের রা.কণ্ঠে বিলালি আযান। আমি অনেক আযান শুনেছি তবে আজকের আজান যেন অন্যরকম। সামনে রাওযাতুন্নবী সা.। ইশকের পরওয়ানা ও প্রেমের পতঙ্গ যারা, পতঙ্গ দলের মত ছুটে আসছে রাওযাতুন্নবীর দিকে দরুদ ও সালামের হাদিয়া এবং ইশক ও মুহাব্বাতের নাযরানা পেশ করতে। আমিও তাদের সঙ্গে শরীক হলাম এবং দরুদ ও সালামের হাদীয়া পেশ করলাম, এরপর হঠাৎ করে আমার তন্ময়তার ভাব কেটে গেলো, আমি জেগে উঠলাম।

লেখক: শিক্ষার্থী, মারকাযুদ্ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া ঢাকা, দাওরাতুল হাদিস, মাদরাসাতুল উলূম দারুল হাদীস হরিপুর,জৈন্তাপুর, সিলেট।


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ