আওয়ার ইসলাম: জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক বলা চরম মূর্খতার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার পল্লী, উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ভবনে নবনির্মিত মুজিব কর্নারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. তাজুল ইসলাম এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছাড়া স্বাধীনতার ঘোষক অন্য কেউ হতে পারে না, হওয়ার কোন সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষক হওয়ার জন্য জনগণ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি দেশকে স্বাধীন করে বিশ্বে মানচিত্রে সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, রেডিও-টেলিভিশনে ঘোষণা দিলেই ঘোষক হওয়া যায় না। জিয়াউর রহমানকে যারা ঘোষক বলতে চান তাদের মূর্খতার একটি মাত্রা থাকা উচিত। এরকম কথা বার্তা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এপ্রসঙ্গে মো. তাজুল ইসলাম জানান, ২৭ তারিখে রেডিওতে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন। তিনি যদি ঘোষক হতেন তাহলে ২৭ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করা হতো। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার উদ্দেশ্যেই স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী দোসররা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে উল্লেখ করে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যম দিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছেন তারা জাতির জন্য, দেশের জন্য কি করেছেন সেটা সকলের জানা আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে গুন্ডা, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য, হত্যা ঘটিয়ে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা সবকিছু তছনছ করে দিয়ে উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত ছাড়া তারা আর কিছু করতে পারেননি তারা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন। রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে না দেওয়ার ব্যবস্থা করছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চে ইতিহাস বিকৃত করে বিতর্কিত কথাবার্তা বলেছেন। স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের মন্ত্রী বানানো হয়েছে, সংসদ এবং বিদেশে মিশনসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন পদে পদায়ন করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে যে সমস্ত বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানরা এসেছেন অথবা যারা ভার্চুয়ালি যোগদান করেছেন তারা সকলেই বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছেন। তিনি আরও বলেন, বিদেশিরা যখন এদেশে আসে তখন তারা সবাই অভিভূত হয়ে যায়। এই কারণে যে এত অল্প সময়ের মধ্যে হতদরিদ্র দেশটি কিভাবে এতো উন্নত হলো। এটা হয়েছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা এবং যোগ্য নেতৃত্বের কারণে, বলেন তিনি।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, পুলিশ, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার এবং ডাক্তারসহ সবাইকেই নিয়েই দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এটাই বঙ্গবন্ধুর দর্শন। বঙ্গবন্ধুকে, বঙ্গবন্ধু আদর্শ ও চেতনা এবং দর্শনকে নতুন প্রজন্মের মাঝে বেঁচে রাখতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এসময়, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
এনটি