শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অ্যাডভোকেট আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারের পাশে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ  প্রাইমারি স্কুলে আলেম ধর্মীয় শিক্ষক বাধ্যতামূলক করতে হবে: মাওলানা ইসলামাবাদী বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন চলতে দেয়া হবে না: মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ২২৫০০ কোটি নতুন টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

মুসলিম বিরোধী নতুন বিল আনতে যাচ্ছে ফ্রান্স, বন্ধ করছে ৪০০ প্রতিষ্ঠান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইয়াহইয়া বিন আবু বকর নদভী৷।।

একের পর দমন পীড়নের নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করে যাচ্ছে বর্তমান ক্ষমতাসীন ফ্রান্সের ম্যাক্রোঁ সরকার৷ তারই একটি নির্দেশের অধীনে, বিভিন্ন আইনী অজুহাত দেখিয়ে মুসলমানদের ৪০০ টি ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে ফ্রান্স৷ সাথে সাথে পাস হতে যাচ্ছে মুসলমবিরোধী নতুন বিল৷

দেশটির জাতীয় সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে ফ্রান্সের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সরকারী নির্দেশনায় মুসলমানদের অন্তত ৪০০ টিরও বেশি দোকান ও স্থাপনা বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির ‘মিডিয়া পার্ট’ নিউজ সাইট কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন৷

আজ (বৃহস্পতিবার ৪ ফেব্রুয়ারি) ফরাসি মিডিয়া পার্ট ওয়েবসাইট জানায় যে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সরকারি আদেশে এবং মন্ত্রাণালয়ের দিকনির্দেশনায় ১৮ হাজার পরিদর্শনকর্মি দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেয়৷ এবং তাদেরকে যে কোনোভাবে আইনী অজুহাত খুঁজে, বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগ দিয়ে দেশের মুসলমানদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করার নির্দেশ দেয়৷

নিউজ সাইটটি প্যারিসের দক্ষিণে, ‘মৌলিন’ শহরে একটি রেস্তোঁরা বন্ধ করার আইন সঙ্গত কারণ না পাওয়া সত্বেও আইনী ফাঁক ফোকড় খুঁজে বন্ধ করার নির্দেশনা সম্বলিত মন্ত্রণালয়ের একটি ইমেল প্রকাশ করেছে।

মিডিয়া পার্ট -এর এক বিবৃতিতে, কমিটির অন্যতম একজন পরিদর্শক (যার নাম উল্লেখ করা হয়নি) বলেছিলো যে, দোকানের মালিকদের চরমপন্থার সাথে কোনও যোগসূত্র না থাকলেও যে কোনও মূল্যে কিছু দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো৷

মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের মতে, মন্ত্রকের মির্দেশনানুযায়ী কোনো অজুহাত খুঁজে মুসলিম দোকান বন্ধ করার জাতীয় সংবিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন৷
মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত বিল পাস।

সম্প্রতি, ফরাসী জাতীয় সংসদের একটি বিশেষ কমিটি "প্রজাতন্ত্রের মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নীতিমালা" নামে একটি বিল পাশের অনুমোদন করতে যাচ্ছে, যা প্রথমে গত ২ অক্টোবর, ফরাসি রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রন "বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই" নামে প্রবর্তন করেছিলো, পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপক আপত্তি আসার পর নামটি পাল্টে "প্রজাতন্ত্রের মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মূলনীতি" হিসাবে পরিবর্তন করা হয়।

তবে এই বিলটি মুসলমানদের জন্য চরম হুমকির এতে কোনো সন্দেহ নেই৷ কেননা তা ফ্রান্সের মুসলমানদের দমন পীড়নের জন্যই মূলত তৈরি করা হয়েছে৷ বিলটিতে এমন কিছু নীতিমালা রয়েছে যা তাদের জীবনের প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই বিধিনিষেধ আরোপ করে, এবং বিভিন্ন পন্থায় ইসলামকে কলংকিত ও বিকৃত করে এমন কিছু বিষয় দেখাতে চায় যার সাথে ইসলামের সামান্যতম সম্পর্ক নেই৷ এর কয়েকটা প্রকার উল্লেখ করা হলো-

এক. ইসলামোফোবিয়া এর মাধ্যমে তারা অন্নান্য ধর্মালবলম্বীদের মাঝে ইসলাম সম্পর্কে ঘৃণা ও ত্রাস সৃষ্টি করতে চায়৷ যাতেকরে নতুন করে কেউ ইসলাম গ্রহন করতে আগ্রহী না হয়৷ প্রচার করতে চায়, ইসলাম হলো বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী ধর্ম৷ আর এটা প্রমাণ করার জন্য তারা ইসলামের মুখোশ পরা কিছু সংগঠনকে ব্যবহার করে জিহাদের নামে ইসলামী বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড চালায়৷ যেমন ‘আই এস’-এর কর্মকান্ডের ভিডিও ফুটেজগুলো ফলাও করে প্রচার করে বলে, ইসলাম চরমপন্থা ও সন্ত্রাস শিক্ষা দেয়৷ নিরপরাধ মানুষ হত্যা করতে শেখায়৷ এভাবে তারা শুধু ইসলামই নয়, ইসলামের পবিত্রও গুরুত্বপূর্ণ একটা বিধান জিহাদকেও কলংকিত করে৷ অতঃপর সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থী দমনের অজুহাত দিয়ে নানাভাবে মুসলমানদের উপর নির্যাতন চালায় এবং তাদের ধর্মীয় বিষয়াদির উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷

দুই. এটির আরেকটি নীতিমালা হলো- মুসলমানদের মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর কড়া নজরদারি করা, এবং এগুলো পরিচালনাকারী সমিতি এবং মুসলিম নাগরিক সংস্থার অর্থায়ন পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা।

তিন. যেসব প্রদেশ ও অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পূর্বে হিজাব পরা নিষিদ্ধ ছিলো, সেখানের মুসলিম নাগরিকদের তাদের বাচ্চাদের জন্য ঘরে কিংবা আলাদা শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহনের স্বাধীনতার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷

চার. এই বিলে রোগীদের তাদের লিঙ্গ এবং ধর্মভেদে বা অন্যান্য কারণে ভিন্ন ডাক্তার নির্বাচন করা নিষেধ, অর্থাৎ মুসলিম হলে মুসলিম ডাক্তার, নারী হলে নারী ডাক্তার নির্বাচন নিষেধ৷ এবং সরকারী খাতের সকল কর্মচারীদের জন্য "ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা" বাধ্যতামূলক করে। চাই সে যে ধর্মেরই হোক৷

এই বিলটি এই ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মুসলমানদের সংখ্যার দিক থেকে ফ্রান্স অন্যতম বৃহত্তম ইউরোপীয় দেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে ইউরোপ কান্ট্রীতে, বিশেষ করে ফ্রান্সে মুসলমানদের হার যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ২০/৩০ বছরের ভিতরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে পরিণত হতে পারে৷ হোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিমতে সেখানের জন্মলাভ করা ৫০ শতাংশ শিশুই মুসলিম৷ মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াই মূলত ইসলাম বিদ্বেষী ফ্রান্স সরকারে এত শত্রুতা, প্রপাগান্ডা এবং হিংসা৷ সূত্র: তথ্যসূত্র: আখবারুল খলিজ, এ্যারাবিক আরটি ডট কম৷

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ