শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই

সোমবারে রোজা রাখা নবি কারিম সা. এর সুন্নত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি জাকারিয়া মাসউদ।।

হযরত কাতাদাহ রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন, এ ব্যাপারে সাহাবারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এ দিনেই আমি দুনিয়াতে শুভাগমন করেছি এবং এ দিনেই আমি নবুয়ত প্রাপ্ত হয়েছি। (সহিহ মুসলিম পৃষ্টা নং ৫৯১, হাদিস নং ১৯৮)
বর্তমান মুসলিম উম্মাহ নানা দলে বিভক্ত হয়ে পরেছে যার যেভাবে মনে চাচ্ছে সে সেভাবে ধর্ম পালন করার চেষ্টা করতেছে। কুরআন হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা যেন মাছভাতে রুপান্তরিত হয়েছে।

একদল মানুষ ঈদে মিলাদুন্নবীর নামে নতুন একটি ঈদ বানিয়ে নিয়েছেন। ঈদে মিলাদুন্নবীর বিধান কি সে ব্যাপারে আলোচনা করার পূর্বে আমি বলতে চাই আল্লাহর নবীর জন্ম এটি সারা পৃথিবীর জন্য রহমত স্বরুপ যেমনটি মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে নবী আমি আপনাকে সারা বিশে^র রহমত স্বরুপ প্রেরণ করেছি। (সুরা আম্বিয়া ১০৭) সুতরাং যিনি সারা দুনিয়ার মানব দানব সহ সকলের জন্য রহমত তাঁর জন্মে খুশি হবেনা এমন কোন মানুষ তো থাকতে পারেনা। অন্তত তাকে মুসলিম বলা যাবেনা।

তাই আমরা এতটুকু নিশ্চিত যে, আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনে আমরা সকলে খুশি এবং আনন্দিত। তবে মনে রাখতে হবে যে, এ আনান্দ উৎযাপনের ক্ষেত্রে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো : যার জন্য আনান্দ উৎযাপন করছি তার মনোপুত হচ্ছে কিনা? আর যদি তা না হয় তাহলে তো এ আনান্দ পুরাটাই বৃথা হযে যাবে।

মিলাদুন্নবীর তারিখ: মিলাদ অর্থ জন্ম আর নবী অর্থ বিশ^নবী সাঃ সুতরাং মিলাদুন্নবী অর্থ হলো, বিশ^নবী সাঃ এর জন্ম। বিশ^ নবী সাঃ এর জন্ম ৫৭০/৫৭১ ঈসায়ী সালে এ ব্যাপারে সবাই ঐক্যমত। তবে কোন মাসে তিনি জন্মগ্রহন করেছেন তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতানৈক্য লক্ষ্য করা যায়। কেউ বলেন, মহররম মাস কেউবা সফর মাস, আবার কেউ রজব মাস, কেউ কেউ বলেন, রবিউল আওয়াল মাসের কথা। তবে আশ্চার্যের বিষয় হলো, যারা রবিউল আওয়াল মাসের মত ব্যক্ত করেন, তারাও একমত নয় যে, বিশ^নবীর জন্ম ঠিক কত তারিখ?

কেউ মত দেন ৮ তারিখ আবার কেউ বলেন, ৯ কেউ বা ১২ তারিখ বিভিন্ন মত পাওয়া যায়। প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, এবার তাহলে বলেনতো! রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখ কোন যুক্তির আর দলিলের ভিত্তিতে ঈদে মিলাদুন্নবীর নামে বিশাল জসনে জুলুসের মাধ্যমে জাঁকজমক পূর্ণ অনুষ্ঠান করে মুসলমানদের ধোঁকা দেওয়ার অর্থ কি? যে উৎসবের দিনটিই অনির্দিষ্ট। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত ভাবে জানা যায় যে, বিশ^নবী সাঃ সোমবারে জন্মগ্রহন করেন। আর সে জন্য তিনি এই দিনে রোজা রাখতেন।

হাদিসের আলোকে সোমবার: হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সোমবার এবং বৃহঃবার জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেওয়া হয়।অতঃপর প্রত্যেক বান্দাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি। (মুসলিম হাদিস নং ২৫৬৫) অন্য হাদিসে আবু হুরায়রা রাঃ বলেন, রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সোমবার এবং বৃহঃবার আমল সমূহকে পেশ করা হয়।

আর আমি চাই যে আমার আমল সমূহকে রোজা অবস্থায় পেশ করা হোক।(তিরমিযি হাদিস নং ৭৪৭) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাঃ বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবারে জন্মগ্রহন করেন, সোমবারে নবুয়ত লাভ করেন, সোমবারে মৃত্যবরণ করেন, সোমবারে মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের জন্য যাত্রা করেন, সোমবারে মদীনায় পৌছান, এবং হাজরে আসওয়াদ পাথরকে কাবার দেওয়ালে রাখেন সোমবারে। সুতরাং সোমবারের সাথে শুধু জন্মই নয় রাসুল সাঃ এর জীবনের একটি বৃহৎ অংশ জড়িত।

তাই বলি যে রবিউল আওয়ালের ১২ তারিখ জসনেজুলুস নয় বরং যদি রাসুলের জন্মে খুশি হয়ে কিছু যদি করতেই হয় তাহলে তা নবীজির দেখানো পথে করতে হবে। এর তা হলো রাসুল সাঃ সোমবারে রোজা রাখতেন তার অনেক কারনের একটি এও যে তিনি এই দিনে জন্মলাভ করেছেন। সুতরাং আসুন আমরাও এইদিনে রোজা রাখি। আর জসনে জুলুস কে না বলি। আল্লাহ কবুল করেন। আমিন

লেখক: সাংবাদিক, ইসলামি গবেষক ও কলামিষ্ট।


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ