আওয়ার ইসলাম: বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদের পুকুরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তামান্না আফরোজ মনির নেতৃত্বে মাছ চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে এসে নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও তার লোকজনকে আটক এবং জাল জব্দ করে। পরে ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার লোকজনকে ছেড়ে দেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে পাঁচটি পুকুর রয়েছে। ওই পুকুরগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা পরিষদ নিজস্ব অর্থায়নে মাছ চাষ করে আসছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান তামান্না আফরোজ মনি, তার ভাই মতিয়ার রহমানসহ ১০-১২ জন লোক মাছ শিকারের জন্য জাল নিয়ে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। তারা পুকুরে জাল ফেলে মাছ শিকার করছিল। পরিষদের অভ্যন্তরে লোকজনের উপস্থিতি দেখে উপজেলা শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. হাসান মৃধা, কবির হাওলাদার ও শাহ আলম ঘটনাস্থলে যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার ভাই মতিয়ার রহমানসহ ১০-১২ জন লোককে পুকুরে মাছ শিকার করতে দেখেন।
পরে তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নারী ভাইস চেয়ারম্যান তামান্না আফরোজ মনি ও তার সহযোগী ১০-১২ জনকে আটক করে। মুহূর্তের মধ্যেই এ ঘটনা আমতলীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘটনাস্থলে অর্ধশতাধিক লোক জড়ো হয়ে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান, ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে ইউএনও আসাদুজ্জামান এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে নারী ভাইস চেয়ারম্যানসহ তার সহযোগীদের ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে নারী ভাইস চেয়ারম্যানের ভাই মো. মতিয়ার রহমান মাছ শিকারের কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত মতে মাছ শিকার করতে গিয়েছিলাম।
অভিযুক্ত নারী ভাইস চেয়ারম্যান মোসা. তামান্না আফরোজ মনি মাছ চুরির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ইউএনও আসাদুজ্জামান ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম সরোয়ার ফোরকানের সিদ্ধান্তে রাত সাড়ে ৩টার দিকে জেলে নিয়ে মাছ শিকার করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা পুলিশ নিয়ে এসেছেন।
এ বিষয়ে আমতলী থানার এসআই মো. দাদন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও ১০-১২ জন লোককে আটক এবং মাছধরা জাল জব্দ করি। পরে ইউএনও স্যারের নির্দেশে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মান-সম্মানের তাগিদে উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও তার লোকজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গভীর রাতে উপজেলা পরিষদের পুকুরে এভাবে মাছ শিকার করা দুঃখজনক।
আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম সরোয়ার ফোরকান চুরির ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, উপজেলা পরিষদের পুকুরে মাছ শিকারের কথা ইউএনও নিজেও জানেন। উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্তমতে মাছ শিকার করতে উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেলে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা পরিকল্পিতভাবে পুলিশ এনে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন।
এমডব্লিউ/