এম. মিজানুর রহমান
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি>
বান্দরবান আলীকদম উপজেলার ‘আমার বাড়ী আমার খামার প্রকল্পের’ (পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক) চুরি হওয়া সাড়ে ২২ লাখ টাকার ১২ লাখ টাকা লামা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটককৃত আসামী উসাইসুই মার্মা লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়ন তুলাতলি এলাকার বাসিন্দা।
সোমবার সকাল ১০টায় লামা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মুহা. রিজওয়ানুল ইসলাম ও লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মুহা. মিজানুর রহমানের সহায়তায় আলীকদম থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ কাজী রকিবউদ্দিন সঙ্গীয় পুলিশ সদস্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে।
লামা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মুহা. রিজওয়ানুল ইসলাম বলেন, টাকা চুরির ঘটনার মূল হোতা আলীকদম আমার বাড়ী আমার খামার প্রকল্পের (পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক) নৈশ প্রহরী উসাইসুই মার্মাকে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে রাঙ্গামাটি সদর সার্কেল ও সদর থানার সহযোগিতা চাওয়া হয়। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সোমবার ভোরে সদর থানার পুলিশ রাঙ্গামাটি জেলা সদরের রিজার্ভ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে শান্তি আবাসিক হোটেল থেকে চুরির ১০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা সহ নৈশ প্রহরী উসাইসুই মার্মাকে আটক করে।
পরে তার বক্তব্যের সূত্র ধরে লামা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের মীম ফিলিং স্টেশনের শাহীন ডেকোরেশন দোকানের গোডাউন থেকে একটি কালো ব্যাগে রাখা ১২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এসময় চুরির টাকা রাখার দায়ে পুলিশ মুহা. শাহীনকে (৩২) গ্রেফতার করে। সে লামা পৌরসভার পার্শ্ববর্তী বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ডের মাটিয়া তলী এলাকার মৃত আবু তাহের এর ছেলে।
এদিকে গতকাল রোববার দুপুরে আলীকদম পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের নৈশ প্রহরী উসাইসুই মার্মা ব্যাংকের সাড়ে ২২ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেলে রোববার বিকেলে আলীকদম থানায় মামলা করে আমার বাড়ী আমার খামার প্রকল্পের (পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক) সমন্বয়ক ফেরদৌসী আক্তার। অভিযোগের ভিত্তিতে টাকা উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ। অবশেষে আজ সোমবার ভোরে তাকে রাঙ্গামাটি জেলা সদরের রিজার্ভ বাজার এলাকার শান্তি আবাসিক হোটেল থেকে ১০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা সহ আটক করে রাঙ্গামাটি সদর থানার পুলিশ। লামা হতে ১২ লাখ ও উসাইসুই মার্মার কাছ থেকে ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। বাকী ১৬ হাজার টাকা সে খরচ করেছে বলে পুলিশকে জানায়।
রাঙ্গামাটিতে আটক উসাইসুই মার্মার কাছ থেকে ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা সহ লামা হতে ১২ লাখ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী রকিব উদ্দিন।
তবে এই ঘটনায় আলীকদম আমার বাড়ী আমার খামার প্রকল্পের (পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক) সমন্বয়ক ফেরদৌসী আক্তার ও মাঠ সহকারী সাইদুল হাসানের যথেষ্ট দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে বলে মনে করেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ সদস্যরা। তারা বলেন তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এতগুলো টাকা চুরির মত ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, রোববার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টা ৩০মিনিটে টাকা নিয়ে উধাও হয় উসাইসুই মার্মা। দুপুর পেরিয়ে গেলেও সে না আসায় উক্ত অফিস কর্মকর্তারা দুপুর ২টার পর খোঁজাখুঁজি শুরু করে এবং অর্থ লোপাটের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। আমার বাড়ী আমার খামার প্রকল্পের কম্পিউটার অপারেটর শরিফুল ইসলাম জানান, টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব নৈশ প্রহরীকে দেওয়া হয়েছিল। সাথে মাঠ সহকারী সাইদুল হাসানকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে দুইজনেই অফিসে আসার কথা থাকলেও ব্যক্তিগত কাজে সদর হিন্দু পাড়ায় থেকে যান সাইদুল হাসান এবং নৈশ প্রহরীকে টাকা নিয়ে অফিসে যেতে বললেও তিনি অফিসে না এসে টাকা নিয়ে উধাও হন।
-এএ