আবুল কাশেম অফিক: সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের পরিবর্তে রোগীদের সেলাই দিচ্ছেন ওয়ার্ড বয়। জানা যায়, গত ১ জুলাই দুপুরে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আসেন বালাগঞ্জ উপজেলা সদর ইউনিয়নের শাহজাহানপুর গ্রামের সালেহ আহমদের ছেলে জুবায়ের হাসান। তার পায়ের জখমের স্থানে সেলাই করে ওয়ার্ড বয়।
এছাড়াও গত ১০ জুলাই পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাজনগরের এক যুবেকের ও ১৮ জুলাই বালাগঞ্জ সদরের পূর্ব খেয়াঘাটে বাকবিতণ্ডার জেরে গুরতরভাবে আহত হয়ে মাথায় শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম নিয়ে এমরাজুল ইসলাম, মুজাহিদ আলী, হাসপাতালে গেলে তখনও সেলাই দিতে দেখা যায় ওয়ার্ডবয়দের। অনুসন্ধানী সংবাদ সংগ্রহ করতে এমন দৃশ্য পড়ে প্রতিবেদকের চোখে।
শুধু জুবায়ের এমরাজুল ইসলাম, মুজাহিদ কিংবা আলীদের ক্ষেত্রে নয়, এই হাসপাতালে আসা এমন প্রায় সবার ক্ষত স্থানে সেলাই দেওয়ার কাজটি করে থাকেন ওই ওয়ার্ডবয়রা।
বিষয়টি নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয়রা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে এটাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, ওই দিন (১ জুলাই) জরুরী বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌস। সহকারী হিসাবে ছিলেন, অমিতা বয় রায়। ওয়ার্ড বয়ের দায়িত্বে ছিলেন দেবাসীস দাস দিপ।
সেলাইয়ের কাজ করা নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ওয়ার্ডবয়দের এক কাজ করা কি আপনাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বা এর নিয়ম আছে কিনা? এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশ মেনেই করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সেদিন আমি ‘জরুরী বিভাগের ক্ষত রোগীকে দেখে ব্রাদার অমিতাবয় কে সেলাই করতে বলে অন্যান্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। ব্রাদার বা স্বাস্থ্য সহকারীর উপস্থিতিতে ওয়ার্ডবয়ের সেলাইয়ের কোন নিয়ম আছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেলাইয়ের কাজটা শুধু বালাগঞ্জের ক্ষেত্রেই নয় সারা বাংলাদেশেই ওয়ার্ডবয়রা করে থাকেন।
এ ব্যাপারে বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এইচএম শাহরিয়ারের সাথে যোগাযোগ করা হলে, ওয়ার্ডবয় সেলাই দিচ্ছেন বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ওই সময় ওয়ার্ডের কর্মরত ডাক্তার অন্তঃ বিভাগে এক রোগীকে ছাড়পত্র দিতে যান। তাই ওয়ার্ডবয় সেলাই দেয়।
ওয়ার্ডবয় সেলাই দেয়ার কোন নিয়ম বা বিধি রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনবলের কমতি রয়েছে, সেবা তো বন্ধ রাখতে পারি না। তাই তাদের দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
-এএ