ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের ওসমানীনগরে সরকারি টিআর প্রকল্পের বিল থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের অভিযোগে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলমগীর রেজার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছে প্রকল্প কমিটির এক সদস্য।
গত মঙ্গলবার বিকেলে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের নিকট এই লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন উপজেলার উছমানপুর ইউপির কিত্তে কমরপুর গ্রামের মৃত জমসেদ আলীর ছেলে আব্দুল মতিন। জেলা প্রশাসকের অফিসের লিখিত অভযোগের স্মারক নং-২৩(২৩-০৬-২০২০)।
অভিযোগের বিষয়টি মৌখিক ভাবে উপজেলা তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তারকে অবহিত করে গত মঙ্গলবারই ডাক যোগে দু’জনকে আরো দুটি অভিযোগপত্র প্রেরণ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক চৌধুরীর টিআর সাধারণ ২য় পর্যায়ের বরাদ্দকৃত থেকে উপজেলার উছমানপুর ইউপির কমরপুর পাকা সড়কের মুখ হতে কিত্তে কমরপুর জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়ন প্রকল্প(নং-২৭) জন্য ৪৪,৫০০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
প্রকল্প কমিটি ও স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগীতায় প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ করা হলে গত ১৫ জুন উপজেলা পিআইও অফিস থেকে প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে ৪৪,৫০০ টাকার বিল প্রদান করেন। প্রকল্প সভাপতি ব্যাংক থেকে ৪৪,৫০০ টাকা তুলার পর পিআইও অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলমগীর রেজা সভাপতির নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা রেখে দেন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে। সে টাকার কোনো রসিদ প্রদান করেননি উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলমগীর রেজা।
অভিযোক্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলমগীর রেজা বলেন, অনেক দিন থেকে ওসমানীনগরে আছি আমার বিরুদ্ধে এ রকম কোনো অভিযোগ নেই।
আমার বিরুদ্ধে এটা একটি ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ৫হাজার টাকা আদায় করার বিষয় তিনি বলেন, টাকাটা আমার নিকট আছে এটা ভ্যাটটেক্সের জন্য রাখা ছিল তার পরও আমি অভিযোগকারী আব্দুল মতিন ও প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য ফারুককে বলেছি টাকা গুলো আপনারা নিয়ে গিয়ে নিজেরা ভ্যাট টেক্স দেন।
প্রকল্পের সদস্য অভিযোগকারী আব্দুল মতিন বলেন, প্রকল্পের টাকার চেয়ে বেশী টাকা দেয়ে আমার এলাকার পক্ষ থেকে সবার সহযোগীতায় সড়কের শতভাগ কাজ করেছি কিন্তু পিআইও অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমগীর রেজা আমাদের প্রকল্পের ৫ হাজার টাকা রেখে দিয়েছেন।
এ টাকার কোনো রসিদও তিনি প্রদান করেননি। এ কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও তার দুজনকে ডাকযোগে রেজিষ্ট্রি করে অভিযোগটি প্রেরণ করেছি।
প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য ফারুক মিয়া উপ-সহকারী আলমগীর রেজা কর্তৃক ৫ হাজার টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, টাকা গুলো আলমগীর রেজা ভ্যাট টেক্সের জন্য রেখেছেন।
এ রকম আমরা বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অফিসে ভ্যাটক্সের জন্য সব সময় টাকা দেই। আলমগীর রেজা ৫ হাজার টাকার কোনো রসিদ দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে ফারুক মিয়া বলেন এ টাকার কোনো রসিদ দেননি তিনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি রায় বলেন, বিষয়টি আমি জানি না এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমি মৌখিক ভাবে জেনেছি। পিআইও অফিসের সরাসরি আমার অধিনে নয় তারা সিলেট ডিআরআর এর অধিনে তার পরও বিষয়টি আমি দেখছি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন আমার অফিসে দুই থেকে আড়াই শ’ বিভিন্ন রকমের চিঠি ও অভিযোগ আসে এ বিষয়টি এখনো আমার নজেনে আসেনি।
-এটি