আওয়ার ইসলাম: এ পৃথিবীতে ছেলে-মেয়ে বা আত্মীয়-স্বজন সাতকুলে কেউ নেই বৃদ্ধ দম্পতি খইমুদ্দিন (৮০) ও হামিজোন বেগমের (৬৭)। সম্বল হিসেবে রয়েছে শুধু একটি জরাজীর্ণ টিনের ঘর এবং ভিটে বাড়ির চার শতাংশ জমি।
মৃত্যুর পর এ জমির মালিক কে হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন নিঃসন্তান এ ভিক্ষুক দম্পতি। পরে অনেক ভেবে-চিন্তে নিজেদের শেষ সম্বলটুকু দান করে দেন স্থানীয় মসজিদে।
বৃদ্ধ এ দম্পতি বসবাস করেন লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোপাল রায় গ্রামে। প্রবীণ খইমুদ্দিন পঙ্গু। তাই সারাদিন ঘরেই কাটে তার। আর তার স্ত্রী হামিজোন বেগম সারাদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভিক্ষে করেন। দিনশেষে বাড়ি ফিরে ভিক্ষা করে উপার্জিত অর্থে কেনা খাবার তুলে দেন স্বামীর মুখে।
এই ভিক্ষুক দম্পতি নিঃসন্তান হওয়ায় মৃত্যুর পর তাদের ভিটে বাড়ির জমির মালিক কে হবে, এ নিয়ে চিন্তায় পড়েন। পরে অনেক ভেবে-চিন্তে জমিটি স্থানীয় নিত্যির দিঘি জামে মসজিদে দান করে দেন। তাদের এমন মহৎ দানের কথা ছড়িয়ে পড়ে গোটা অঞ্চলে। তাই এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক উদ্যোগ নিয়ে তাদের একটি আধ-পাকা ঘর তুলে দেন। আর মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে খুশি এই ভিক্ষুক দম্পতি।
হামিজোন বেগম বলেন, সবকিছুই যেনো স্বপ্নের মতো লাগছে। দীর্ঘ অভাব-অনটনের জীবনের শেষ দিকে এসে একটি আধা-পাকা বাড়ি পেয়েছেন তারা। এটি তাদের স্বপ্ন ছিলো। ভিটে বাড়ির জমিটুকু দান করে দেওয়ায়ও তিনি খুব খুশি হয়েছেন। অন্তত তাদের মৃত্যুর পর এ সম্পত্তি কোনো ভালো কাজে লাগবে।
স্থানীয় শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ওই বৃদ্ধ দম্পতি মসজিদে জমি দান করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের কোনো সন্তান-সন্ততি নেই। তাই নিজেদের জমিটি তারা মসজিদে দান করে দিয়েছেন। মৃত্যুর পর এলাকার লোকজনই তাদের দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করবে।
এ বিষয়ে কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আতাউজ্জামান রঞ্জু বলেন, স্থানীয় যুবকরা ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে একটি আধা-পাকা ঘর তুলে দিয়েছেন। এতে তারা ব্যাপক খুশি হয়েছেন। জীবনের শেষ সময়ে হলেও এবার কিছুটা নিরাপদ ও সাচ্ছন্দ্যে বসবাস করতে পারবেন তারা।
-এটি