বেলায়েত হুসাইন: ফরিদপুরে করোনার উপশর্গ নিয়ে আব্দুল হান্নান (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি শহরের হাউজিং স্টেটের মেজর আজাদের ছয়তলা একটি ভবনের নিচতলায় ভাড়া থাকতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ওই ভাড়া বাড়িতে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই সময় তিনি ফ্ল্যাটে একাই ছিলেন। ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার পুলিশ দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
জানা যায়, মারা যাওয়া ওই ব্যক্তি একটি পুষ্টি বিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে ফরিদপুরে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার এক গ্রামে। তিন মেয়ের জনক তিনি।
ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম জানান, ফরিদপুর শহরের কমলাপুরে তাদের কার্যালয়। তারা মোট ২০ জন এই কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। গত পাঁচ দিন ধরে ওই কর্মকর্তা জ্বর, কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে ভুগছিলেন। এরপর থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। প্রতিদিন তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার নিয়ে ওই ব্যক্তির ভাড়া বাড়িতে যেতেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তার মুঠোফোনে কথা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন তার স্ত্রী বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে আজ ফরিদপুর এসে পৌঁছাবে। দুপুরে তারা ওই বাড়িতে ওষুধ ও খাবার নিয়ে যান। অনেক ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই মুহা. ফোরকান খান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ওই ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। এজন্য অফিসের লোকজন তাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল।
তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তির করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর পর তার মরদেহ স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর টিমের নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে গোসল, কাফন ইত্যাদি কার্য সম্পাদন করে রাজশাহী তার নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
জানা যায়, তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর জেলা টিমের প্রধান মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর টিমের স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে তার গোসল, কাফন ইত্যাদি সম্পাদন করেন। স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে অন্যতম- হাফেজ মাওলানা আবু নাসির, হাফেজ মাওলানা মুফতি শিহাব উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা খোবির হোসেন, হাফেজ আলবির মাহমুদ, হাফেজ মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর টিম ৯ জন করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফন সম্পাদনের খেদমত আঞ্জাম দিয়েছে, যার মধ্যে একজন নারী ও একজন হিন্দু রয়েছে।
তিনি আরও জানান, যতদিনে করোনা সংকট থাকবে ততদিনে তাকওয়া ফাউন্ডেশন মানবতার কল্যাণে নিবেদিত থাকবে। এছাড়াও ইসলাম, দেশ, স্বাধীনতা ও মানবতার কল্যাণে যখনই প্রয়োজন তখনই আমরা প্রস্তুত থাকবো ইনশাআল্লাহ! ফরিদপুরে তাকওয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা পেতে ফোন করুন: ০১৭৬২৮২৯০৪৩ , ০১৭৪৭০১৭৮৪৮,০১৭১৮৭৫৯৭১১।
-এএ