রফিকুল ইসলাম জসিম
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>
মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে শিববাজার এলাকায় থাকেন দীলিপ মালাকার। দিনমজুর কাজ করেন তিনি। চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন কর্মহীন থেকে খাদ্য সংকটে পড়েছেন দীলিপ। লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ আনতে সংকোচ লাগে তার। একদিন তার বাড়িতে পৌঁছে যায় চাল, ডাল, তেল ও আটাভর্তি একটি বস্তা। জানতে পারেন, ইউপি সদস্য বাবুল কুমার সিংহ তার মতো মানুষের তালিকা তৈরি করে এভাবেই বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যখন অনেক জনপ্রতিনিধি নিরাপদ থাকতে ঘরে থাকছেন, তখন সাধারণ মানুষের পাশে যারা সবসময় থাকছেন, তাদেরই একজন মৌলভীবাজার কমলগঞ্জে মাধবপুর ইউনিয়নে ০২ নং ওয়ার্ডের
ইউপি সদস্য বাবুল কুমার সিংহ ।
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্র পরিবারের মাঝে নিজ অর্থায়নে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা করেছেন ইউপি সদস্য বাবুল কুমার সিংহ। তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিও অব্যাহত রেখেছেন।
গত শুক্রবারে মাঝের গাঁও গ্রামে ১২ পরিবারে ৫০০ টাকা, ৩ পরিবারে ৩০০ টাকা, ২ পরিবারে ২০০ টাকা, ২ টি পরিবারে ধান ০১ মণ এবং ১ জনকে চা দোকানদার তৈল ০১ লিটার, মশুরী ডাল ০১ কেজি চানা ডাল ০১ কেজি, আটা ০২ কেজি লবন ০১ কেজি করে প্রদান করেন।
গতকাল আবার ২৭ পরিবারে তৈল ০১ লিটার, মশুরী ডাল ৫০০ গ্রাম, চানা ডাল ০১ কেজি, আটা ০১ কেজি, চিনি ৫০০ গ্রাম, চাপা শুটকি ১০০ গ্রাম দিয়েছেন।
এর আগেও এই ইউপি সদস্য, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রথম দিকে থেকেই ওয়ার্ডে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে জীবাণু নাশক স্প্রে করে এলাকায় ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কার্য্যক্রম গ্রহণ করেছেন।
মাধবপুরে ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নিমাই সিংহ বলেন, সরকার ত্রাণ দিচ্ছে। অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও ত্রাণ দিচ্ছেন। সমস্যা হচ্ছে, ত্রাণ দেওয়ার পদ্ধতি এখনো সেকেলে। তাই সঠিক ব্যক্তির হাতে সাহায্য পৌঁছানো নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, 'তবে ইউপি সদস্য বাবুল তার ব্যাতিক্রম উদ্যাগে সাধুবাদ জানায়, সরকারি তালিকা করার ক্ষেত্রে সকলের পরামর্শ করার কারণে এ ধরনের সমস্যা অনেক কম হচ্ছে। এখনো ত্রাণ নিয়ে কোনো অনিয়ম বা চুরির খবর পাওয়া যায়নি।'
ইউপি সদস্য বাবুল কুমার সিংহ বলেন, ইউনিয়নের আমার ওয়ার্ডে অসহায় দরিদ্র মানুষের কথা চিন্তা করে আমি আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। সরকারিভাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে সেটা পর্যাপ্ত না হওয়ায় অনেকেই বাদ পড়ে যাচ্ছেন। তাই আমি আমার ইউনিয়নের মানুষের কথা চিন্তা করে এ উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দয়া করে আপনারা সবাই ঘরে থাকুন। সরাকারী নির্দেশ মেনে চলুন। যদি দেশকে ভালোবাসেন, দেশের মানুষকে ভালোবাসেন, আপনার পরিবারকে ভালোবাসেন তাহলে দয়া করে ঘরে থাকুন। আমরা আপনাদের পাশে আছি। সৃষ্টিকতা এই প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস থেকে সবাইকে রক্ষা করুক।
-এটি