মুহাম্মদ ইকরামুল হক
চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা প্রতিনিধি>
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর বিরুদ্ধে দৈনিক পূর্বকোণের সাতকানিয়া প্রতিনিধি সুকান্ত বিকাশ ধর ও প্রথম আলোর সাতকানিয়া প্রতিনিধি প্রণব বল এবং কয়েকটি অখ্যাত অনলাইন মিডিয়ার কথিত নামধারী সাংবাদিক বেশ কিছুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা-বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে গতকাল মঙ্গলবার (৫ মে) বিকেলে পদুয়া হেমায়েতুল ইসলাম মাদ্রাসা মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন সাতকানিয়া-লোহাগাড়া ওলামা পরিষদ।
সম্মেলনে লোহাগাড়া ওলামা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা, বাংলাদেশ নেজাম ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর অধ্যক্ষ ছরওয়ার কামাল আজিজি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তাগণ বলেন, পরপর দু'বারের নির্বাচিত সাংসদ প্রফসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী একজন সৎ এবং যোগ্য জনপ্রতিনিধি হিসেবে ইতিমধ্যে সাতকানিয়া লোহাগাড়াবাসীর হৃদয়ের মণিকোটায় বিশেষ স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে একসময়ের অশান্তির জনপদ সাতকানিয়া লোহাগাড়া আজ শান্তির নীড়ে পরিণত। এই কর্মবীরের অক্লান্ত পরিশ্রমের বদৌলতে বিগত সাড়ে ছয় বছরে দুই উপজেলায় সাধিত হয়েছে অভাবনীয় উন্নতি। সরকারের সাথে আলেম-ওলামাদের সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়ে তিনি পরিগণিত হয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে।
বক্তারা বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য হিসেবে ড. আবু রেজা নদভী জেলা ত্রাণ কমিটির উপদেষ্টা এবং সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলার ত্রাণ কমিটির মূখ্য উপদেষ্টা। দুঃখজনক হলেও সত্য, সম্প্রতি করোনা মহামারিতে কর্মহীন হতদরিদ্র জনসাধারণের জন্য সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বরাদ্দকৃত ত্রাণ বিতরণের একটি নির্দেশনা মাননীয় সাংসদ দিলেও সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে নিজেদের খেয়াল খুশিমত বিতরণ করতে থাকে৷
মাননীয় এমপি উপজেলা প্রশাসনকে বিভিন্ন ইউনিয়নে গরীব ও দুঃস্থ মানুষের যে তালিকা পাঠিয়েছিলেন তাদের কাউকেই ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়নি৷ এমতাবস্থায়, তিনি তাঁর ত্রাণ তহবিল ও আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২২ হাজার হতদরিদ্র কর্মহীন, আলেম-ওলামা, ইমাম-মোয়াজ্জিন ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মাঝে ত্রাণ ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। বিগত দুই দশক ধরে সাতকানিয়া লোহাগাড়ার মাটি ও মানুষের সাখে একাকার মাননীয় এমপি ড. আবু রেজা নদভী'র চেয়ে বেশি এলাকার সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অসহায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সম্পর্কে অন্য কারো বেশি জানার কথা নয়। সুতরাং তাঁর তালিকাটি ছিল সবচেয়ে বেশি হতদরিদ্র পরিবারের। এমন হতদরিদ্রের পরিবার সরকারী ত্রাণ সহায়তা বাদ যাবে তা কোনভাবে তাঁর কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয়নি। তাই তিনি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় প্রদত্ত ত্রাণ সহায়তার ২৫ শতাংশ সংসদ সদস্য এর মাধ্যমে, ১৫ শতাংশ উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে এবং ৬০ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণের জন্য দুই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জন্য ডিও লেটার দেন৷
মূলতঃ সরকারী ত্রাণ সুষম বন্টনের জন্য তাঁর এই পত্র প্রেরণ৷ কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁর এই মহতি উদ্যোগকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে গোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে। বিশেষ করে দৈনিক পূর্বকোণের সাতকানিয়া প্রতিনিধি সুকান্ত বিকাশ ধর ও প্রথম আলোর সাতকানিয়া প্রতিনিধি প্রণব বল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কুরুচিপূর্ণ সংবাদ সরবরাহ করে পত্রিকা দু'টিতে। কট্টর সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন এই দু'জন সংবাদাতা বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাননীয় সাংসদের পেছনে উঠে পড়ে লেগেছেন দীর্ঘদিন ধরে। এদের কারণে আলেম সমাজসহ সুধি মহলের কাছে পত্রিকা দু'টির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ড.আবু রেজা নদভী শুধু একজন মাননীয় সাংসদ নন, তিনি দেশের আলেম সমাজের প্রাণস্পন্দন। তাঁর বিরুদ্ধে যেকোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বদ্ধপরিকর দেশের আলেম সমাজ। সংবাদ সম্মেলনে ওলামা পরিষদ নেতৃবৃন্দ দৈনিক পূর্বকোণ ও প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের কাছে সাতকানিয়া লোহাগাড়ার চলমান শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টকারী, চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্মে অভিযুক্ত সংবাদাতা সুকান্ত বিকাশ ধর ও প্রণব বলকে বহিস্কারের দাবী জানিয়ে বলেন, তাদের দাবী পূরণ না হলে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া ওলামা পরিষদ জেলা ও জাতীয় ওলামা পরিষদের সাথে সমন্বিত প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহন করে মানব বন্ধন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানসহ বৃহত্তর কর্মসূচী গ্রহন করবে।
সাতকানিয়া লোহাগাড়া ওলামা পরিষদ সেক্রেটারী মাওলানা শোয়াইব চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন লোহাগাড়া উপজেলা ওলামা পরিষদের উপদেষ্টা মাওলানা আমিন উল্লাহ, সভাপতি মাওলানা মুফতি হাবিবুল ওয়াহেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আমির আহমদ, সেক্রেটারী ও সমন্বয়ক মাওলানা শোয়াইব চৌধুরী, সহ-সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা জুনাইদ সাদেকী, সাতকানিয়া ওলামা পরিষদের উপদেষ্টা মাওলানা আবদুল গফুর, সভাপতি মাওলানা আবদুল মুবিন, মাওলানা মোহাম্মদ এমরান, মুফতি মোহাম্মদ ইদ্রিস, মাওলানা হেলাল উদ্দিন, হাফেজ আবদুল কাইয়ুম, মাওলানা আবদুল্লাহ আল মারুফ, স্থানীয় এমপি’র একান্ত সহকারী সচিব শাহাদাৎ হোসেন সাহেদ প্রমুখ।
-এএ