আল কোরআন এমন ফজিলতপূর্ণ কিতাব- যার প্রতিটি হরফ পাঠে আছে সওয়াব। তবে কোরআনের কিছু আয়াত ও সুরা এমন আছে, যেগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্যের কথা রাসুলুল্লাহ (সা.) বিশেষভাবে ইরশাদ করেছেন। এমনই একটি আয়াতের নাম ‘আয়াতুল কুরসি’। আয়াতটিকে রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত আয়াতুল কুরসি নামে পরিচিত। এটি পাঠ করলে অসংখ্য পুণ্য লাভ হয়।
আয়াতুল কুরসি হলো: আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কাইয়ুম। লা তা-খুযুহু সিনাতু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিস-সামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল-আরদ। মান যাল্লাযি ইয়াশ ফাউ ইনদাহু ইল্লা বি ইযনিহি, ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম ওয়ালা ইউহিতুনা বিশাইইম-মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শা আ, ওয়াসিয়া কুরসিইউহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়াহুয়াল আলিইয়ুল আজিম।
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করা কোনো কঠিন কাজ নয়। আয়াতুল কুরসি আমরা অনেকেই মুখস্থ পারি। যারা পারি না; তারাও মুখস্থ করে নিতে পারি।
আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াতের আরও ফায়দা আছে, রাতে ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করে ঘুমালে আল্লাহ সব ধরনের বালা-মসিবত থেকে হেফাজত করেন। যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পড়বে সে বিকেল হওয়া পর্যন্ত জিন-শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে। যে ব্যক্তি বিকেলে তা পড়বে; সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জিন-শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সুরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত আছে। সেটি হলো আয়াতুল কুরসি। যে ঘরে এটি পাঠ করা হবে, সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে।
হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে- তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না।
হজরত আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রা.) রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসুল (সা.) বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসি।
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতিটি বস্তুরই চূড়া আছে। কোরআনের চূড়া হলো সুরা আল বাকারা। এতে এমন একটি আয়াত আছে, যা কোরআনের আয়াতগুলোর প্রধান; তা হলো আয়াতুল কুরসি।
কেউ যদি প্রত্যেক নামাজের পর তা পাঠ করতে না পারে, তাহলে অন্তত ফজরের নামাজের পর এবং মাগরিবের নামাজের পর পাঠ করবে। আশা করা যায়, এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পুরো রাত ও পুরো দিন পাঠকারীকে যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ রাখবেন।
আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি আয়াতুল কুরসি পাঠ করার তাওফিক দান করুন।