বালাগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের শিওরখাল গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য প্রবাসী দুই কমিউনিটি নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ১ সালিশ ব্যক্তিসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল রোববার রাত ১০টায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বালাগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর পূর্বে বৃহত্তর শিওরখাল গ্রামের ৩ টি পাড়ায় সমন্বিত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষে গ্রামের যুক্তরাজ্যস্থ প্রবাসীরা মুহা. আজাদ খাঁনকে সভাপতি করে ওয়ান কমিটি নামে একটি সংগঠন গঠন করেন। এতে যোগ দেন গ্রামের মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীরাও সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্রামের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় গ্রামে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
গ্রাম কমিটির মাধ্যমে উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে সংগঠনের অর্থায়নে শিওরখাল গ্রামের ১২০০ ফুট সড়কে সি সি ঢালাই ও ১০০০ ফুট সড়কে মাটি ভরাট কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ ছাড়া গ্রামের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখায় খুব অল্প দিনে বিভিন্ন মহলে সংগঠনটি প্রশংসা লাভ করে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যস্থ ওয়ান কমিটির এক সভায় কমিটির কোষাধ্যক্ষ পদ সহ সাধারন সদস্য পদ থেকে রেজুয়ান আলী কয়েছকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। অব্যাহতির ঘটনায় কয়েছ অনুসারিরা পৃথক হয়ে পড়েন, গ্রামের বিভিন্ন কাজে দেখা দেয় পরস্পর দুটি গ্রুপের মতানৈক্য।
প্রায় এক মাস আগে করোনা ভাইরাস রোধে ঘরে থাকা কর্মহীন লোকজনের মধ্যে গ্রামের প্রবাসীরা খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেন। কয়েকটি পরিবার খাদ্য সামগ্রী ফিরিয়ে দেয়। ক্ষোভ দেখা দেয় দাতাদের মধ্যে, এরপর ফেইসবুকে ছালেহ ছালিক নামে একটি আইডি থেকে উত্তর পাড়া পাঞ্চয়েত কমিটির সভাপতি মনোহর খান সাধারন সম্পাদক ছমির আলী , পূবাশা যুব সংঘের সাংগঠনিক ফুজায়েল খান সাজুর বিরুদ্ধে ছবি সহ আপত্তিকর লেখা পোষ্ট করা হয়। এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে স্থানীয় গ্রামের একটি পক্ষ।
শনিবার বিকেলে সংগঠনের সভাপতি মুহা. আজাদ খাঁনের অনুসারী আপ্তাব আলীর ছেলে আলমগীরের সাথে রেজুয়ান আলী কয়েছ অনুসারি মাওলানা ইউনুছ খাঁনের ছেলে সাজু খাঁনের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মুখামুখি অবস্থান নেয় দুই পক্ষ। দিবাগত রাত ১০ টায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে আজাদ খাঁন অনুসারি ৫ জন ও কয়েছ অনুসারী ৪ জন দুপক্ষের মোট ৯ জন আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে এগিয়ে আসা মো. কুদরত উল্যার পুত্র হারিস আলী ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত হন। আশংকা জনক অবস্থায় তাকে ওসমানি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েছ আলী অনুসারী ছিদ্দেক আলীর পুত্র মুহা. সমছু মিয়া গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কমিউনিটি নেতা মো. আজাদ খাঁনের অনুসারী আব্দুস শহিদ খাঁন ও রেজুয়ান আলী কয়েছ অনুসারী মো. ছমির আলী এ প্রতিবেদকের কাছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য তুলে ধরে বিষয়টি আপোষ নিস্পত্তির চেষ্টা চলছে বলে জানান ।
এ বিষয়ে বালাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এখনো কোন পক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলেই আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এএ