ইবরাহিম শওকত: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত পরিষদ বংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ২ দিন ব্যাপী ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন ২০২০ এর ১ম দিন সম্পন্ন।
৭ ফেব্রিয়ারি (শুক্রবার) দুপুর ১২ টায় রাজধানীর আফতাব নগরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত পরিষদ বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিন ব্যাপী ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনের প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয়।
আমীরুল মুমিনীন বালিকা মাদরাসার মুহতামিম ও জামিয়া কারীমিয়া আরাবিয়া রামপুরার মুহাদ্দিস মুফতি ফরিদুল ইসলমের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান মুফতি আল্লামা মুফতি হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী।
প্রধান অতিথির বয়ানে তিনি বলেন, বড় খুশির সংবাদ আজ আপনারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সম্মেলনে শরীক হয়েছেন।
যারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতে থাকেন তাদেরকে আহলে হক বলা হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বলা হয় যারা সত্যি সত্যিই রাসূল সা.এর মুহাব্বত করে। যারা হযরত আবু বকর রা. ও হযরত ওমর ফারুক রা. এর অনুসরণ করে এবং হযরত উসমান রা. ও হযরত আলী রা.কে ভালোবাসে।
এটা হলো ইত্তেবায়ে রাসূল সা. আর এটাই হলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত। যারা আমাদের দেওবন্দের অনুযায়ী চলে তারাই হক।সুন্নাতের অনুসরণ করার সময় সাহাবায়ে কেরামকে সামনে রাখা আমাদের জন্য জরুরি। তাঁদের বিপরীত চলা সুন্নাতের অনুসরণ নয়।
খতিবুল হিন্দ আল্লামা সালমান বিজনূরী তার বয়ানে বলেন, আমাদেরকে ঈমানের উপর বাঁচতে হবে আর ঈমানের মধ্যে মৃত্যু বরণ করতে হবে। এ দুটো কথা এমন কথা যে দুটো কথা আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন নবীদের মাধ্যমে তাদের সন্তানাদির কাছে এই বার্তা পৌঁছিয়েছেন।
অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমান সময়ে এই সকলের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব অনেক গুন বেড়ে গেছে। আদম আ. কে যখন আল্লাহ তায়ালা তৈরি করেছেন তখন তাকে আল্লাহ তায়ালা শিখিয়েছিলেন যে ঈমানের উপর বেঁচে থাকবে এবং ঈমানের উপর মৃত্যু বরণ করবে সে জান্নাতে যাবে।
কিন্তু শয়তান একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলো,আমি আপনার বান্দাদেরকে ডান দিক থেকে,বাম দিক থেকে প্রতারিত করবো এবং জাহান্নামে নিয়ে যাবো।
সেজন্য পৃথিবীর শুরু থেকেই ঈমানের উপর টিকে থাকা ও মৃত্যু বরণ করার প্রয়োজনীয়তা তো রয়েই গেছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে তার গুরুত্ব অনেক গুণ বেশি বেড়ে গেছে।
অবস্থা এখন এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে শয়তানের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন অত্যাধুনিক টেকনোলজি,অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে মানুষের ঈমানের উপর টিকে থাকাকে কঠিন করে ফেলেছে। এ কারণে এ সবকটির গুরুত্ব অনেক বেশি বেড়ে গেছে
জামিয়া মাদানিয়া যাত্রবাড়ির মুহতামিম মুহিউসসুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা ছাত্রদের আদর-ভালোবাসার বদলে বেয়াদব বলে দূরে সরিয়ে দেই। ফলে তারা যেখানে আদর পায়, সম্পদ পায় সেখানে চলে যায়। আর এভাবে আমরা আমাদের মূল্যবান মেধাগুলোকে হারাচ্ছি। আমাদের উচিৎ মেধাবীদের পূর্ণ মূল্যায়ন করা।
অপরাধ করলে ভয়-ভীতি দেখানো, বুঝানো। কিন্তু এমন প্রহার অনুচিত যাতে কোমল শরীরে দাগ পড়ে যায়। আমি কয়েকজন ওস্তাদকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা কেন এত মারলেন? সবাই বললেন, রাগ উঠেছিলো।
অথচ হাদিসে রাগের বশীভূত হয়ে বিচার করতেও নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং রাগের বশীভূত হয়ে প্রহার করা স্পষ্ট হারাম। ইসলাম বিরোধী আইন না করার ঘোষণার কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
সম্মেলনে আরো বয়ান করেন, আকবর কমপ্লেক্স মিরপুরের মুহতামিম মুফতি দেলাওয়ার হুসাইন, জামিয়াতুল আবরার মুহাম্মদপুরের শাইখুল হাদিস আল্লামা মুফতি মনসূরুল হক, জামিয়া তালীমিয়া ঢাকার মুহতামিম মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী কুয়াকাটা।
সম্মেলনে জুমার পূর্বে বয়ান ও জুমার নামাজ পড়ান ইসলামী দাওয়াহ সংস্থা বাংলাদেশের সহ-আহবায়ক ও জামিয়া কারীমিয়া আরাবিয়া রামপুরার মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি হোসাইন আহমদ জাবের।৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দারুল উলুম দেওবন্দের সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি হাবীবুর রহমান আজমী।
বয়ান করবেন, ইসলামী ফিকহ অ্যাকাডেমি ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি আল্লামা ওবায়দুল্লাহ আসআদী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত পরিষদ বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, সেক্রেটারি মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদী,মুফতি মুহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ,মুফতি হাবীবুর রহমান কুয়াকাটা,মাওলানা আব্দুল খালেক শরীয়তপুরীসহ দেশ বরেণ্য অনেক ওলামায়ে কেরাম।
-এটি