আওয়ার ইসলাম: লালমনিরহাটের সেই ঐতিহাসিক সাহাবা মসজিদ পুননির্মাণ ও জামে’ আস-সাহাবা কমপ্লেক্সের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন উপলক্ষ্যে ইসলামি মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল ৩ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) সকাল ১১ টা থেকে জামে’ আস সাহাবা কমপ্লেক্স মাঠে লালমনিরহাটের ৭ নং পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাহাবা মসজিদের সভাপতি মো: দেলওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাসুল সা.-এর চাচা হজরত আব্বাস রাযি.-এর বংশধর ও ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদে আকসার গ্র্যান্ড ইমাম শায়খ আলী উমর ইয়াকুব আল আব্বাসী।
আরো উপস্থিত ছিলেন, জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজারের ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা মুসা বিন হাবীব, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলেম মাওলানা খতিব তাজুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাওলানা ফরিদ খান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা সালেহ হামিদী।
খতিব তাজুল ইসলাম বলেন, ঐতিহ্যবাহী আলোচিত সাহাবা মসজিদকে আমরা একটি যুগপোযোগী প্রতিষ্ঠান রূপে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মসজিদ কমিটি ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের সাথে সমন্বয় করে জামে’ সাহাবা কমপ্লেক্স নির্মাণে আমরা বদ্ধ পরিকর।নির্মাণ কাজের ভিত্তি স্থাপন হলো। তিনি আরও বলেন, মসজিদের পাশাপাশি দেশের একটি বৃহৎ ইসলামিক সেন্টার হবে এই কমপ্লেক্স। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, এ সাহাবা মসজিদের কাজ শেষ না করে যেন আমার মরণ না হয়।
উল্লেখ্য, ৬৯ হিজরিতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাটের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস গ্রামে সাহাবা মসজিদ নির্মিত হয়। স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী এই মসজিদটি নির্মাণ করেছেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ সা.-এর একজন সাহাবা। যিনি এই অঞ্চল দিয়ে চীনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এবং চীনের বিস্মৃত কোয়াংটা নদীর ধারে কোয়াংটা শহরে তাঁর নির্মিত মসজিদ ও সমাধি রয়েছে। ওই সাহাবির নাম আবু আক্কাস রা.।
১৯৮৩-’৮৪ সালের গ্রামবাসী মসজিদটি আবিষ্কার করে। ইসলামিক লেখক মতিউর রহমান বসনীয়া রচিত ‘রংপুরে দ্বিনী দাওয়াত’ বইয়ে এ মসজিদ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। রংপুর জেলার ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায়, রাসূলের সা. মামা বিবি আমেনার চাচাতো ভাই আবু ওয়াক্কাস রা. ৬২০ থেকে ৬২৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার করেন (পৃ. ১২৬)।
অনুমান করা হয় যে, ৬৯০ খ্রিস্টাব্দের মসজিদটি আবু ওয়াক্কাস রা. নির্মাণ করেন। বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ও প্রাচীন এই মসজিদটির উত্তর-দক্ষিণে ২১ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১০ ফুট। মসজিদের ভেতরের পুরুত্ব সাড়ে ৪ ফুট।
বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী মসজিদ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল-জাজিরা সংবাদ প্রকাশ করে। আওয়ার ইসলামের বিশেষ টিম এ মসজিদটি সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের আকর্ষণ তৈরি করতে নিরলস পরিশ্রম করে। পরে এ মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে মসজিদ কমিটি।
আরএম/