ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ||
হযরত আল্লামা আশরাফ আলী সাহেব আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে চলে গেলেন। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৫ আমরা ঢাকা সাঈদাবাদস্থ ডেমরা রোডে নেজামে ইসলাম পার্টি অফিসে তিনিসহ একই কক্ষে থাকতাম। মাওলানা নূরুল হক আরমান সাহেব রহ., মাওলানা আবূুল খালেক নিজামী, মাওলানা আবদুল মাজেদ আতাহারী ও উপাধ্যক্ষ শেখ লোকমান ভাইও আমাদের সাথে থাকতেন। আমি ইসলামী ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি আর আল্লামা আশরাফ আলী সাহেব ছিলেন নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব। মাওলানা আবদুল মালেক হালিম সাহেব (দামাত বারাকাতুহুম) ছিলেন পার্টির সভাপতি।
কত সুখ দুঃখের ইতিহাস আছে। একসাথে নামাজ, একসাথে খাওয়া দাওয়া। পার্টির কার্যক্রমে অংশ নেয়া। নানা জায়গায় সাংগঠনিক সফর। কুমিল্লার বিজয়পূরে তাঁর গ্রামের বাড়ীতেও গিয়েছি আরমান সাহেবসহ।
একসময় খতীবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ.- এর নির্দেশে তিনি নেজাম ইসলাম পার্টির ব্যানারে কুমিল্লা থেকে জাতীয় সংসদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
ঢাকায় থাকতে তিনি আমাকে ২/৩ বার হযরত আল্লামা শাহ হাকিম আখতার সাহেব রহ.-এর ঢালকানগরস্থ ইসলাহী মজলিশে নিয়ে গেছেন। শাহ সাহেব (হ.- এর জ্ঞানগর্ব নসীহতে আমার জীবনে পরিবর্তন সূচিত হয়।
পরবর্তীতে আমি চট্টগ্রামে ওমরগণি কলেজে শিক্ষকতা করলেও হযরতের সাথে যোগাযোগ ছিল। কুমিল্লা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি সবসময় আমাকে দাওয়াত দিতেন। কাছেমুল উলুম মাদরাসায় গেলে আমার বিশেষ যত্ন আত্তির ব্যাপারে তাঁর অত্যাগ্রহ আমাকে লজ্জায় ফেলে দিত।
কুমিল্লার আন্তর্জাতিক ইসলামী সম্মেলনে আমার বক্তব্যের আগে প্রশংসাসূচক মন্তব্য করতেন তিনি।
২০১৮ সালে কুমিল্লা কাছেমুল উলুম মাদরাসায় তাঁর সাথে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে ওসিয়ত করেন, “খালিদ ভাই, কোন দিন যদি আমার মৃত্যসংবাদ শুনেন, আপনি আল্লাহ তায়ালার দরবারে আমার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন।”
হায় আল্লাহ! সেদিন এসে গেলো অবশেষে। হে রহমান, হে রহিম! আমাদের প্রিয় মানুষ আল্লামা আশরাফ আলী সাহেবকে ক্ষমা করুন। সারা জীবন হাদীসের খিদমতের কারণে তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম নসীব করুন, আমিন, আমিন।
লেখক: সাবেক অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ওমরগনি এম,ই,এস কলেজ চট্টগ্রাম।
আরএম/