শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই

বক্তা হলেই কি মুফতি!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আলী হাসান তৈয়ব ।।

আমাদের দেখা সময়ে ওয়াজ-মাহফিলের মতো উন্মুক্ত প্রোগ্রামে উপস্থিত প্রশ্নোত্তরপর্ব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মূলত ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. ও মুফতি কাজী ইবরাহিম সাহেবদের মাধ্যমে। তাদের দেখাদেখি এখন মাহফিলে সবাই ফতোয়া দিতে শুরু করেছে। এতদিন জনারণ্যে ধারণা ছিল, মাহফিলের বড় বক্তা মানেই বড় আলেম। তারপর ধারণা চালু হলো— যত লকব তত বড় হুজুর/শায়খ। এখন শুরু হয়েছে, বক্তা যে বড় আলেম তা বোঝাতে ওয়াজের পর প্রশ্নোত্তরপর্বের মুফতি হওয়া। কিয়ামত তুমি কত দূর!

দুঃখজনকভাবে ইসলামিক টিভি ও পিস টিভি বন্ধ। কিন্তু বন্ধ নয়, বহু গুণ বেড়েছে লাইভ প্রশ্নোত্তরের মুফতি। ইউটিউব টিভিতে, নিজের চ্যানেলে, ফেসবুকে ওয়ালে, এফএম রেডিওতে ও মাহফিলে লাইভ জবাবদাতা। জানি না ইসলামের ইতিহাসে কোনো কালে এভাবে ফতোয়া নিয়ে দায়িত্ব জ্ঞানহীন এত মানুষ ছিল কিনা।

বিল্লাহি, সবার শ্রদ্ধা রেখে বলতে বাধ্য হচ্ছি, যে ছেলেটাকে দেখতাম আজীবন পরীক্ষায় ফেল করতে, সেও জবানের শক্তির জোরে বড় বক্তা কাম বড় আলেম। সবশেষ এখন বড় বক্তা হবার সুবাদে বড় মুফতি। যেমন দেখি এমন লোকদের নিজে মাদরাসাতুল বানাতের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হবার জোরে মুহাদ্দিস আর শাইখুল হাদিস হতে। কী সমৃদ্ধ তাদের ভিজিটিং কার্ড! তাতে লেখা : এখানে ফোনে মাহফিলের দাওয়াত নেওয়া হয়। ফোনে তদবিরের ফুঁ দেওয়া হয়! কিয়ামত তুমি কত দূর!

এইসব জাহেলদের সম্পর্কে সালাফরা অনেক কথা বলে গেছেন। কুরআন-সুন্নাহতেও এদের ফেতনা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। আমার মতো পাপীর ক্ষুদ্র জ্ঞানে খালি একটি কথা মনে হয় : আমাদের জবানে-কলমে ঘোষিত অনেক কাফের-ফাসেকের চেয়েও উম্মতের জন্য বড় ফেতনা এই আমরা। হ্যা আমরা।

উম্মে সালামা রা. বর্ণিত হাদিসটি মনে করি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হবার আগে আকাশ পানে তাকিয়ে একটি দোয়া পড়তেন—

«اللّٰـهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ، أَوْ أُضَلَّ، أَوْ أَزِلَّ، أَوْ أُزَلَّ، أَوْ أَظْلِمَ، أَوْ أُظْلَمَ، أَوْ أَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ».

অর্থাৎ— হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই যেন নিজেকে বা অন্যকে পথভ্রষ্ট না করি, অথবা অন্যের দ্বারা পথভ্রষ্ট না হই; আমার নিজের বা অন্যের পদস্খলন না করি, অথবা আমায় যেন পদস্খলন করানো না হয়; আমি যেন নিজের বা অন্যের উপর যুলম না করি অথবা আমার প্রতি যুলম না করা হয়; আমি যেন নিজে মুর্খতা না করি, অথবা আমার উপর মূর্খতা করা না হয়।' (আবু দাউদ : ৫০৯৪, সহিহ)।

এবার ভাবুন, পৃথিবীর সর্বকালের সেরা ও মহত্তম মানব মাসুম (নিষ্পাপ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দোয়া এমনি শেখাননি উম্মতকে। আমাদের আজকের অবস্থা দেখলে তিনি কী বলতেন! আহ, আমাদের রোজ ঘর থেকে বের হবার আগে তো বটেই, প্রতিবার কলম আর জবান খোলার আগে একবার অন্তত এ দোয়া দিল থেকে পড়ে নেওয়া দরকার।

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

আরএম/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ