আওয়ার ইসলাম: ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ও দিখণ্ডিত করার একশ দিনের বেশি অতিক্রান্ত হলেও এখনও গৃহবন্দি উপত্যকার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও লোকসভার সাংসদ ফারুক আবদুল্লাহ। শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে তা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একজোটে বিরোধীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর বরাতে আগেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল যে, লোকসভার অধিবেশন শুরু হলেই বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে ফারুক আবদুল্লাহ’র প্রসঙ্গ তুলবেন। সোমবার লোকসভায় বিরোধীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, বেআইনিভাবে ফারুক আবদুল্লাহকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাকে অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে দেয়া হোক।
অধিবেশন শুরু হতেই ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা আবদুল্লাহ’র অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্পিকারকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘স্যার, ফারুক আবদুল্লাহ আসেননি। হয় তাকে মুক্তি দিতে সরকারকে নির্দেশ দিন নইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এখনই এ বিষয়ে বিবৃতি দিতে বলুন।’
স্পিকার ওম বিড়লা ‘নতুন সদস্যরা আগে শপথ নিন, তারপর দেখা যাবে’ বললে মুহূর্তেই উত্তাল হয়ে সংসদ কক্ষ। ‘বিরোধীদের ওপর হামলা বন্ধ হোক’, ‘ফারুক আবদুল্লাহকে মুক্তি দেয়া হোক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স ও ডিএমকে সাংসদরা। পুরো প্রশ্নোত্তর পর্ব তারা স্লোগান দেন ‘
স্লোগান দিতে দিতে বিরোধী সাংসদরা ওয়েলে নেমে আসতে শুরু করলে ওম বিড়লা বলেন, ‘সবকিছু নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত আমি। কিন্তু আগে নিজেদের আসনে ফিরে আসুন। সংসদ স্লোগান দেয়ার জায়গা নয়। তর্ক বিতর্ক এবং আলোচনা করতেই এখানে আসা।’
কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘শাসক দল সংসদকে কোন চোখে দেখে তার প্রমাণ হলো সভায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কেউ নেই। কাশ্মীর অবরুদ্ধ আজ টানা ১০৮ দিন। সরকার দেশের সাংসদদের উপত্যকায় যেতে দিচ্ছে না। অথচ বিদেশের সাংসদদের নিয়ে গিয়ে পৃথিবীকে দেখাতে চাইছে কাশ্মীর কত স্বাভাবিক।’
ফারুক আবদুল্লাহকে বন্দি করার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে ডিএমকে নেতা টিআর বালু বলেন, ‘সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাকে বন্দি করা হয়েছে। মাননীয় স্পিকার আপনি অবিলম্বে এ নিয়ে হস্তক্ষেপ করুন।‘ সংসদে এমন হট্টগোলের মুখে সভা মুলতবি রাখার প্রস্তাব দেয়া হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
গত আগস্টে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলসহ রাজ্যটিকে দিখণ্ডিত করে মোদি সরকার। সেদিন রাতেই রাজ্যের সাবেক তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লাহ, তার ছেলে ওমর আবদুল্লাহ ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক (পিডিপি) নেত্রী মেহবুবা মুফতিসহ বেশিরভাগ নেতাকে গৃহবন্দী করা হয়।
আরএম/