ইশতিয়াক সিদ্দিকী
হাটহাজারী প্রতিনিধি
বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উগ্র হিন্দুত্ববাদিদের স্বপ্ন পুরণ উল্লেখ করে উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে উত্তর চট্টলার ওলামায়ে কেরামের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হাটহাজারী ওলামা পরিষদ।
সোমবার (১১ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে ওলামা পরিষদের সভাপতি, মেখল মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা নোমান ফয়জী ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাফর আহমদ ফতেহপুরী বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় প্রদানে আইনের ন্যূনতম নীতি অনুসরণ করা হয়নি। গায়ের জোরে অকাট্য দলীল-প্রমাণ ছাড়াই বেআইনীভাবে উগ্র হিন্দুত্ববাদিদের পক্ষে এই রায় প্রদান করা হয়েছে। এ রায় বিশ্বের দেড়'শ কোটি মুসলমানসহ সকল শান্তিকামী মানুষ কোনভাবই মেনে নেবে না।
নেতৃদ্বয় বলেন, ভারতে মুসলমানদের নির্মূল করে হিন্দুত্ববাদী রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই রায় প্রদান করা হয়েছে। বাবরি মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণের এ রায়ে মুসলমানরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী রায়। মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের রায় দিয়ে বিশ্বমুসলিমের কলিজায় ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, প্রথম মুঘল সম্রাট জহির উদ্দিন শাহ্ বাবরের শাসনামলে ১৫২৮ সালে বর্তমান ফৈজাবাদ জেলার অন্তর্গত অযোধ্যায় বাবরের সেনাপতি মীর বাকি কর্তৃক বানানো বাবরি মসজিদ ৫০০'শ বছরেরও পুরনো একটি মসজিদ। ভারতের প্রত্নতাত্বিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী এখানে কোন হিন্দু মন্দির ছিল না। অথচ রাম জন্মভূমি ও রামমন্দিরের ভূয়া এবং মিথ্যা দাবি তুলে ১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর উগ্রবাদী হিন্দুরা ঐতিহাসিক এ মসজিদকে শহীদ করেছে। সর্বশেষ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ভেঙ্গে ফেলা বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের রায় দিয়ে মুসলিম উম্মাহর সাথে ইতিহাসের জঘন্যতম গাদ্দারী ও অবিচার করেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, ইসলামী শরীয়ত মতে মসজিদ স্থানান্তরের কোন সুযোগ নেই। তাই অন্যত্র পাঁচ একর জমি নয় বাবরি মসজিদের জায়গায় পুণরায় মসজিদ নির্মাণের রায় দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট যেই অবিচারমূলক রায় দিয়েছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অনতিবিলম্বে এই রায় বাতিল করে যথাস্থানে মসজিদ নির্মাণের রায় দিয়ে মুসলমানদের সার্বিক নিরাপত্তা ও ধর্মীয় অধিকারের সুরক্ষা দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
অন্যথায় মুসলমানদের ন্যায্য ধর্মীয় অধিকার ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্বমুসলিম ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আরএম/