আওয়ার ইসলাম: পার্কে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ ডোবায় রেখে বাসায় ফিরে পোলাও মাংস রান্না করে উৎসব পালন করেছেন মিরপুরের শাহ আলী এলাকার এক কিশোর গ্যাং লিডার। নিহত স্ত্রীর নাম বন্যা (১৭) আর ওই গ্যাং লিডারের নাম রুবেল (১৮)।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে রুবেল ও তার সহযোগী তারিকুল (১৭) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে শাহ আলী থানা-পুলিশ শনিবার জানিয়েছে।
শাহ আলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বেড়ানোর কথা বলে কিশোর গ্যাং লিডার রুবেল তার স্ত্রীকে বন্যাকে নিয়ে রাজধানীর বোটানিক্যাল গার্ডেনে নিয়ে যায় গত ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার।
সুযোগ বুঝে সহযোগী তারিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে বন্যাকে খুন করে লাশ ডোবায় ডুবিয়ে রাখে। বন্যার বাবা জসিম উদ্দিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বোটানিক্যাল গার্ডেনের ডোবা থেকে বন্যার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে এই হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে রুবেল ও তার সহযোগী তরিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালত জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা বলেছে, মঙ্গলবার রাতে রুবেল স্ত্রীকে পারলারে নিয়ে সাজ গোজ করায়। এরপর তারা বিকেলে বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেড়াতে নিয়ে যায়।
সন্ধ্যার সময় সেখানে বন্যার গলায় থাকা ওড়না পেঁচিয়ে রুবেল ও তরিকুল বন্যাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর তারা লাশ পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।
বন্যার মা পপি বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি কয়েক দিন থেকে আমার মেয়ের খবর পাই না। তারা আমার মেয়েকে মেরে পানির নিচে রেখে দিয়েছিলে।
আমার মেয়ে আর কখনো আমাকে মা বলে ডাক দেবে না। আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, আমার সোনার চান কালো হয়ে গেছে। আমি আর কখনো তাকে ফিরে পাব না।
বন্যার বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, তারা আমার মেয়েকে না খাওয়াতে পারলে বা সংসার না করতে চাইলে আমার কাছে ফের দিয়ে দিত। আমি তাকে খাওয়াতাম। কিন্তু কেন তারা আমার কলিজার টুকরাকে এভাবে খুন করল।
এদিকে বন্যা হত্যার ঘটনায় রুবেল ও তার সহযোগীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে শনিবারও বিক্ষোভ করেছে রূপনগর এলাকার বাসিন্দারা। তারা আসামি ও তাদের সহায়তাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
স্থানীয়রা জানান, কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অনেক দিন থেকে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে রুবেল তার বাহিনী। তাদের কারণে এলাকার লোকজনও অতিষ্ঠ ছিল।
-এটি