এ এস এম মাহমুদ হাসান,
বিশেষ প্রতিবেদক
রাজধানীর মিরপুরের একটি মহিলা মাদরাসা থেকে এক ছাত্রী পালিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মাদরাসার প্রিন্সিপাল ও কর্তৃপক্ষ। পালিয়ে যাওয়া ছাত্রীর নাম সাজমিন। সে নোয়াখালীর কবিরহাট থানার ইন্দ্রপুর গ্রামের শরিফুল্লাহর মেয়ে।
প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ৩১ আগস্ট বেলা ১১টায় মাদরাসার ক্লাস চলাকালে মেইন গেট দিয়ে সাজমিন একা বেরিয়ে যায়। যদিও ওই ছাত্রীর পরিবার মাদরাসার বিভাগীয় দায়িত্বশীল মাওলানা মাসুম আকবরসহ তিনজনকে বিবাদী করে গুমের মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় মাদরাসার প্রিন্সিপালকে পল্লবী থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। প্রিন্সিপালকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই মেয়েকে উপস্থিত করার আলটিমেটাম দিয়েছে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরপুরের বাউনিয়াবাঁধ ডি ব্লক এলাকায় ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত জামিয়া কুরআনিয়া তালিমিয়া মাদরাসার মহিলা শাখার ওই ছাত্রী মিজান জামাতে অধ্যয়ন করত। তার মায়ের শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের কারণে বিগত চার বছর ধরে ওই মাদারাসায় ঈদসহ বড় বড় ছুটিতে সে গ্রামের বাড়ি না গিয়ে মাদরাসাতেই অবস্থান করত।
তথ্যমতে, গত ঈদুল আজহার ছুটির পর ২৪ আগস্ট মাদরাসায় ক্লাস শুরু হলেও সাজমিন ২৭ আগস্ট মাদরাসায় উপস্থিত হয়। উপস্থিতির পর আগের চেয়ে পড়ালেখায় অমনোযোগী দেখা যায়। সর্বশেষ ৩১ আগস্ট মাদরাসা থেকে চলে যায়।
মাদরাসার মুখপাত্র ও বিভাগীয় দায়িত্বশীল মাওলানা মাসুম আকবর আওয়ার ইসলামকে বলেন, ৩১ আগস্ট দুপুরে মেয়েটি পালিয়ে যাওয়ার পর দুপুরেই ওই মেয়ের বাবাকে ফোনে বিষয়টি জানানো হয়। সন্ধ্যার পর তার বাবা মাদরাসায় এলে আমি ও তার বাবা থানায় গিয়ে একটি জিডি করি এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই মেয়ের বাবা আমাকেসহ আরও তিনজনকে বিবাদী করে গুমের মামলা করেন।
মাসুম আকবর বলেন, ছাত্রীটির পালানোর ব্যপারে আমার বা মাদরাসার বিন্দুমাত্র গাফিলতি বা সংশ্লিষ্টতা নেই। ছাত্রীটি স্বেচ্ছায় চাতুরতার সাথে দারোয়ানের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়েছে।
পালানোর আগে সে একটি চিরকুট লিখে যায়। চিরকুটে তার আসবাবপত্র কয়েকজন ছাত্রীর মাঝে বন্টনের কথা লিখে রাখে। যা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, পালিয়ে যাওয়া ছাত্রীর বাবাকে কয়েক মাস আগে কে বা কারা তার মোবাইল ফোনে মেয়েকে গুম করার হুমকি দেয়। মোবাইল ফোনে সেই হুমকির সূত্র ধরেই ওই মাদরাসার প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মামলায় মেয়েকে গুম করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এলাকাবাসী বলছে, এ মাদরাসার প্রিন্সিপালকে আমরা ৩০ বছর ধরে একজন ভালো মানুষ হিসেবে জানি। তিনি গুমের মতো কিংবা কোনো ছাত্রীকে ক্ষতি করার মতো এমন জঘন্য কাজের সাথে জড়িত থাকতে পারেন না।
আরএম/এটি