আওয়ার ইসলাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলটিতে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা পেতে মহাসাগর ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষা অপরিহার্য।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে তৃতীয় আইওআরএ সমুদ্র অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের (বিইসি-৩) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের উপলব্ধি করতে হবে যে আমাদের প্রত্যেকটা বিনিয়োগ এবং প্রত্যেকটা পদক্ষেপই মহাসাগর ও সামুদ্রিক সম্পদকে রক্ষায় নিতে হবে। কারণ দীর্ঘ মেয়াদে এ অঞ্চলের জন্য এটা অপরিহার্য।’
‘টেকসই সমুদ্র অর্থনীতির প্রসার- ভারত মহাসাগরের সর্বত্তোম সুযোগের ব্যবহার’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে আইওআরএ সদস্যভুক্ত দেশের মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাসাগর ও সাগর গ্রিনহাউজ গ্যাসের প্রায় ৩০ শতাংশ গ্যাস এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সৃষ্টি হওয়া ৯০ শতাংশ অতিরিক্ত উষ্ণতা শোষণ করে নেয়।’
তিনি বলেন, ‘সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানব জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের অতি দ্রুত সাড়া দিতে হবে। মহাসাগরে যেকোনো অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, লক্ষ্য অর্জনের জন্য সমুদ্র ও মহাসাগরের জন্য একটি সুসংহত, লাভজনক এবং সামগ্রিকভাবে একটি প্রতিরক্ষামূলক নীতি গ্রহণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের স্মরণে রাখতে হবে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমরা সামুদ্রিক পরিবেশকে বিনষ্ট করতে পারি না। আমাদের সামুদ্রিক অর্থনীতির সাথে সমুদ্রের বিষয়টাও ভাবতে হবে।’
সামুদ্রিক জীবন সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ধ্বংসাত্মক পদ্ধতি ও উপায় দ্বারা মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বঙ্গোপসাগর থেকে মৎস্য সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও বিকাশের লক্ষ্যে স্বল্প-মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী ‘কর্ম পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করেছে। এ কারণে ‘আমরা ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো মাছের উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, আইওআরএ’র সদস্যরা এই অঞ্চলে টেকসই নীল অর্থনৈতিক বেল্ট তৈরিতে সমন্বিতভাবে সহায়তা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে সিদ্ধান্ত নেবেন।
চলতি বছরের ১ অক্টোবর আগামী দুই বছরের জন্য আইওআরএ’র সহ-সভাপতি এবং ২০২১ সালের ১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব পালনে সকল সদস্যের সহযোগিতা চান তিনি।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, আইওআরএ’র চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশ, বন ও মৎস্য বিষয়ক উপমন্ত্রী মাখস্তো ম্যাগদেলিন সোতিয়ু, আইওআরএ’র মহাসচিব রাষ্ট্রদূত ড. নোমভুইয়ো এন নোকউই, আন্তর্জাতিক সমুদ্র কর্তৃপক্ষের (আইএসএ) মহাসচিব মাইকেল ডব্লিউ লজ বক্তব্য রাখেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।
-এটি