আওয়ার ইসলাম: সমুদ্র বিরোধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য জনমনে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষ করে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে জাতিসংঘে উত্থাপিত অনিষ্পন্ন সমুদ্রসীমা, ভারত থেকে অস্ত্র ক্রয় এবং কাশ্মীর ও আসাম ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিষয়ে যেমন জনমনে উদ্বেগ তৈরি হয়, তেমনি মানবাধিকার বিষয়েও আমাদের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র নিয়ে বিরোধ রয়েছে। দেশ দু’টি চলতি শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে ধাপে ধাপে বঙ্গোপসাগরে কনটিনেন্টাল শেলফ নিয়ে হঠাৎ আগ্রাসী নতুন নতুন বিরোধ তৈরি করে গভীর সমুদ্রে প্রবেশের পথ বিচ্ছিন্ন করে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের উন্মুক্ত যোগাযোগের পথকে অবরুদ্ধ করে দিতে চায়।
সঙ্গত কারণেই দেশের স্বার্থকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ কড়া প্রতিবাদ করে এবং এ বিষয়ে জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি উত্থাপন করে। যা এখনো অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়ে গেছে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন গত ২০ আগস্ট ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠকের পর সাংবাদিকদেরকে নতুন যে উদ্যোগের কথা বলেছেন, তা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য গভীর শংকা তৈরি করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকরদেরকে বলেছেন, কিভাবে বঙ্গোপসাগরে কনটিনেন্টাল শেলফ নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে চলমান বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায় সে বিষয়ে উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়েছে এবং উভয়পক্ষ সমঝোতার মাধ্যমে এ বিরোধ নিষ্পত্তি করবে এবং জাতিসংঘে তাদের পেশ করা আপত্তি তুলে নেয়া হবে।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, আমরা ভারতসহ বিশ্বের সকল দেশের প্রতি কোনরূপ বৈরিতা নয়, বরং সুসম্পর্ক চাই। তবে সেটা হতে হবে সমতা ও সমমর্যাদার ভিত্তিতে পারস্পরিক স্বার্থ ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে। বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্কের দোহাই দিয়ে কোন দেশের কাছে কেউ বাংলাদেশের মর্যাদা ও স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিবে এবং সার্বভৌমত্বকে অনিরাপদ করে তুলবে, এটা দেশের জনগণ মেনে নেব না। দেশবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্রকে উৎখাতে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দ্বিধা করবে না।
-এএ