বেলায়েত হুসাইন
সৌদি আরবের বিশিষ্ট ধর্মীয় স্কলার ও প্রখ্যাত দায়ী সালমান আল আওদাহকে গ্রেফতারের রহস্য উন্মোচন করেছে মার্কিন ম্যাগাজিন ওজাই।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ম্যাগাজিনটি জানায়, সৌদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আল আওদাহকে পুনরায় গ্রেফতারের পিছনে 'বিদ্রোহী প্রজন্ম'কে প্রতিনিধিত্ব করাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর বিদ্রোহী প্রজন্ম-ই 'নবজাগরণ' হিসেবে পরিচিত। খবর আল জাজিরার।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমটি জানায়, সৌদি এবং কাতার দ্বিপাক্ষিক মতপার্থক্য শীঘ্রই সমাধান করবে বলে আশা প্রকাশ করে বিগত ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে নিজের লক্ষ লক্ষ ফলোয়ারের উদ্দেশ্যে সালমান আল আওদাহ একটি টুইট করেন। এর পরেই মূলত তাকে গ্রেফতার করে রিয়াদ।
গ্রেফতারের পরে স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়া সত্ত্বেও ৬২ বছর বয়সী এই আলেমকে কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে আটকে রাখা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশেরও আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাজনৈতিক বিজ্ঞানী স্টিফান ল্যাক্রিক্সের বরাত দিয়ে ওজাই ম্যাগাজিন জানিয়েছে ,সৌদি আরব এরকম দমন নীতির ব্যবহার এর আগে কখনই করেনি, যেমনটি এসব অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোতে করা হয়।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার দাবী, বিরোধী শক্তিকে দমন এবং যেকোনো পরিস্থিতি ঠান্ডা রাখার জন্য এই 'গ্রেফতার' মুহাম্মদ বিন সালমানের দারুণ কৌশল! এরই অংশ হিসেবে কখনো ধর্মীয় স্কলারগণও তার কৌশলের অংশে পরিণত হয়েছে। আর বিশিষ্ট দায়ী আল আওদাহর উপর প্রিন্সের ক্ষোভের কারণ হল, তিনি তরুণ প্রজন্মকে রেনেসাঁর জন্য উদ্ধুদ্ধ করছেন।
এছাড়াও, এই রেনেসাঁর মূল নীতিসমূহ আক্ষরিক অর্থে মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের নীতিমালার সঙ্গে মিলে যায়। আল আওদাহর আন্দোলনের অনেক সদস্য মিশর এবং সিরিয়া থেকে সৌদিতে আশ্রয় নেয়া শরণার্থী বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সালমান আল আওদাহ সরকারের ক্ষোভের শিকার হন মূলত জনগণের হয়ে যখন মাজলুমদের পক্ষে কথা বলেন এবং সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনা করেন। পাশাপাশি জনগণকে নিজেদের দেশকে রক্ষা করার আহবান জানান।
এরই প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে তিনিসহ আরো একাধিক স্কলারস ও দায়ীকে গ্রেফতার করে সৌদি সরকা। পরবর্তীতে দেশটি তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডেরও আবেদন জানায়। বিশ্বের অগণিত ভক্তের দাবী এবং সমালোচনা এড়াতে আপাতত তার বিচারকার্য স্থগিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে একবার গণজাগরণের উত্থানের অভিযোগ এনে ১৯৯৪ সালের আগস্টে সৌদি প্রশাসন ব্যাপক গ্রেফতারাভিযান চালায়। সেই অভিযানে আটক করা হয় সালমান আল আওদাহকে। কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে অনেকদিন অত্যাচারিত হন তিনি। অবশেষে ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে জামিনে মুক্তি লাভ করেন। সুতরাং এই নিয়ে তিনি দুইবার গ্রেফতার হলেন।
সূত্র: আল জাজিরা
আরএম/