আবদুল্লাহ তামিম ♦
জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা বাতিল হওয়ার পর, লাদাখ ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে, কারফিউও আরোপ করা হয়েছে, ঠিক এ মুহূর্তে সাধারণ মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে ওঠেছে।
কাশ্মীরের বর্তমান সময় ফল তোলার মৌসুম। মৌসুমি ফল রপ্তানি করতে না পারায় কোটি কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে দেশটির। রাজ্য প্রশাসনকে জাতীয় সমবায় বিপণন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের (নাফেড) সাহায্য নিতেও দিচ্ছে না।
সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বে কাশ্মীরের বাদাম উত্পাদনের পরিমাণ ৯১%, আপেল ৭০%, বাদাম ৯০%, চেরি এবং জাফরানে ৯০% ভাগ রয়েছে। তাদের বার্ষিক আয়মূল্য প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকা। কাশ্মীরে প্রতি বছর ২৩.৫৩৫ মেট্রিক টন ফলন দেয়।
আপেল, পাইন, নাশপাতি জাতীয় ফলগুলি ২০.৩৫ মিলিয়ন টন অবদান রাখে বিশ্বের বাজারে। একই সাথে শুকনো ফলের পরিমাণ ২.৮০ লক্ষ মেট্রিক টন। পাহাড়ী জমির প্রায় ৩.৩ লক্ষ হেক্টর জমির ফলমূল এবং শুকনো ফলের জন্য ব্যবহৃত হয়।
দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপুরের এক আপেল কৃষক বলেন, তার সবচেয়ে বড় সমস্যা যোগাযোগের অভাব। তিনি বলেন, ল্যান্ডলাইন সংযোগ না থাকার কারণে আমরা অন্যান্য রাজ্যের পাইকারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না।
নিরাপত্তার উদ্বেগে কেউ কাশ্মীর সফর করতে প্রস্তুত নয়। বাধ্য হয়ে আমাদের পণ্য অল্পমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। সরকার আমাদেরকে ট্রাক সরবরাহ করতে পারে। কিন্তু সে সুযোগ আমরা পাচ্ছি না।
শোপিয়ানের আরেক আপেল ব্যবসায়ী শাহনাওয়াজ বলেন, গত বছর আমি ১২০০-১৩০০ টাকায় এক বাক্স আপেল বিক্রি করেছি। তবে, এ বছর ৪৫০-৫০০ রুপিতেও বিক্রি করতে পারছি না।
জম্মু ও কাশ্মীরের গভর্নর সত্যপাল মালিক গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তিনি এ অঞ্চলে আপেল চাষীদের সহায়তা করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেছিলেন, তিনি এমন একটি প্রকল্প ঘোষণা করবেন যেখানে আপেলের ন্যূনতম মূল্য (এমএসপি) বাজার মূল্যের চেয়ে ১০টাকা বেশি হবে।
গভর্নর বলেছিলেন, নাফেড এখান থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার আপেলও কিনে নিবে, যা মোট উৎপাদনের ৫০% শতাংশের চেয়ে বেশি হবে। কৃষকদের উপার্জনে কোনও প্রতিকূল প্রভাব না ফেলতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব। কিন্তু আমরা এর কোনো সুযোগ সুবিধা পাইনি এখনো।
জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের মুখপাত্র রোহিত কানসালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফল ও শুকনো ফলের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রাক রয়েছে। এ বছর ১.২০ লক্ষ মেট্রিক টন ফল পরিবহন করা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের ৮৯,০০০ মেট্রিক টন ছিল।
জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের ফলের পরিবহন ব্যবস্থাপনার এক নোট অনুসারে, প্রায় ২০০০ ট্রাক প্রয়োজনীয় পণ্যবাহী কাশ্মীরে পৌঁছেছে। ফল পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে এ ট্রাকগুলো।
সরকারের হিসেব অনুসারে, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে শুরু হওয়া পিক সিজনে প্রতিদিন প্রায় ১১০০-১২০০ ট্রাকের প্রয়োজন হবে। সব ঠিক থাকলেও আগের মত দাম পাচ্ছে না বিক্রেতারা। ফল রপ্তানি হলেও মূল্য প্রায় অর্ধেকের চেয়ে কমে ছাড়তে হচ্ছে। সূত্র: দ্যা ইনকিলাব হিন্দি নিউজ
-এটি