আওয়ার ইসলাম: ঢাকার মোহাম্মদপুরে তাজমহল রোডে অবস্থিত সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া বায়তুল আমান মিনার মসজিদের বোর্ডিং (রান্নাঘর) উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএনসিসির দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশি সহায়তায় একটি দল তাজমহল রোডের সি-ব্লকের খেলার মাঠ ও পার্কের পাশে অবস্থিত মাদরাসার রান্নাঘরটি উচ্ছেদ করে।
এদিকে, মাদরাসার রান্নাঘরটি উচ্ছেদে গেলে বাধা দেয় ছাত্ররা। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীদের সঙ্গে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের সহায়তায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে রান্নাঘরটি ভেঙ্গে দেয়া হয়।
সিটি করপোরেশন বলছে, গত এক বছর ধরে কয়েক দফা নোটিশ ও আলোচনার পরেও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জয়গাটি অবৈধভাবে দখল করে আছে, শেষে বাধ্য হয়েই এই অভিযানে নেমেছেন তারা।
তবে মাদারাসা শিক্ষার্থীরা বলছে, কোন নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে অভিযান চালিয়ে রান্নাঘরটি ভাঙা হয়েছে।নাজমুল ইসলাম নামে এক মাদরাসা ছাত্র গণমাধ্যমকে বলেন, ওই ঘরটি প্রায় ৬০০ ছাত্রের রান্নার কাজে ব্যবহৃত হতো।
নাজমুল বলেন, আমরা বলেছিলাম আমাদেরকে বিকল্প একটি জায়গা দিয়ে ঘরটি ভেঙে দিতে। কিন্তু কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে সেটা ভেঙে দিল। আজ দুপুরে আমাদের রান্না হবে না। আমরা কি খাব জানি না। উল্টো আওয়ামী লীগের ছেলেরা আমাদের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে।”
ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর মাঠ ও পার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাজমহল রোড মাঠেরও সৌন্দর্যবর্ধন ও সংস্কার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নব্বই শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ছয় মাস আগে থেকেই মাদরাসা কমিটির লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আলাদা জায়গায় রান্নাঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কর্নপাত করেননি। এজন্য আজ উচ্ছেদ করতে হয়েছে।
অন্যদিকে মসজিদ ও মাদরাসা কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন দাবি করেন, ওই মাঠের মালিক সিটি করপোরেশন নয়। ১৯৭২ সাল থেকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জায়গাটি ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, আমরা এত বেকুব নই যে সিটি করপোরেশনের মাঠ দখল করে সেখানে মাদরাসা বানাব। এটা গণপূর্তের জায়গা, আমরা এটা ১৯৭২ সাল থেকে ব্যবহার করছি। এইটা কমিশনার রতনকে, মেয়র আতিককে বলা হয়েছে। আতিক আমাকে জানিয়েছিল এটা ভাঙা হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও তারা ভুল বুঝিয়েছে, তারা নাকি রাস্তা উচ্ছেদ করতে এসেছে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, “অন্যায়ভাবে মাদরাসার ছেলেদের ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। খাওয়ার ঘর ভাইঙ্গা দেওয়া কি উচিত হয়েছে? আপনি তাদের প্রশ্ন করেন, পূর্ত মন্ত্রণালয়ের জায়গায় তারা মাঠ বানাতে আসে কীভাবে। আর ওইটা তো মাঠ না, এটা আমাদের ঈদগাহ ছিল, স্থানীয় মানুষকে জিজ্ঞেস করেন। তারা যদি ঠিক হত তাহলে স্থানীয় মানুষ একসঙ্গে বেরিয়ে আসার পর তারা পালিয়ে গেল কেন?”
অভিযানকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম রতন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ মিয়া, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন, সম্পত্তি কর্মকর্তা সগির হোসেন প্রমুখ।
https://www.facebook.com/100012320796111/videos/749321005488586/
আরএম/