রকিব মুহাম্মদ
আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকা থেকে বাদ পড়ছে ১৯ লাখের বেশি মানুষ। শনিবার সকাল ১০টায় বহু প্রতীক্ষিত এই তালিকা প্রকাশ করা হলো। এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জনের নাম অন্তর্ভুক্তি হয়েছে। অপরদিকে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়েছে চূড়ান্ত তালিকা থেকে।
এদিকে এনআরসি থেকে বাদ পড়াদের কীভাবে বিতাড়ন করা হবে সেই কৌশল নির্ধারণ করছে মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। এ ব্যাপারে আসামের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের কীভাবে বিতাড়ন করতে পারি সে সম্পর্কে নতুন কৌশল গ্রহণে কেন্দ্র ও আসাম সরকার মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এনআরসি কোনও বাংলাদেশিকে বহিষ্কারের জন্য কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল বা ফাইনাল নয়। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং আপনি বিজেপি আমলে এমন অনেক ফাইনাল দেখতে পাবেন।’
তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় বাংলাদেশ। এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের ঢাকা সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ড. মোমেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আসামের এনআরসির বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম। যেখানে এমনিতেই ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা খুব কষ্টে আছি, আবার আসামের ৪০ লাখ মানুষের কথা মিডিয়ায় শুনতে পাচ্ছি।’
‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আসামের এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না,’ -বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ঢাকা সফরকালে আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টিকে ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রানিয়াম জয়শঙ্করও।
তবে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতের আসামে এনআরসি নিয়ে যা হচ্ছে তাতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বরং ভারতের মানুষেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
‘তবে বাংলাদেশের এক ধরনের দুশ্চিন্তার কারণ অবশ্যই আছে। অতীতে, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালের দিকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে অনেককে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করেছিল ভারত। তাই এবারও বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে,’- বলেন ড. দেলোয়ার।
আরএম/