আওয়ার ইসলাম: কাশ্মীরের দুই বোনকে অপহরণ করে জোড় করে বিয়ে করে ভারতের বিহার রাজ্যের দুই সহোদর ভাই। বিয়ের কয়েকদিন পর এক অনুষ্ঠান থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপরহরণের পর কয়েকদিন আগেই বিয়ে করেছে বলে জানিয়েছে তারা।
এনডিটিভির এক অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ বিহার পুলিশের সহায়তায় অপহরণের অভিযোগে ওই দুই সহোদরকে গ্রেফতার করেছে।অপহরণের পর জোরপূর্বক বিয়ে করতে বাধ্য হওয়া ওই বোনের বাড়ি কাশ্মীরের রাম্বান জেলায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার ওই দুই ভাই হলো পারভেজ ও তাবরেজ আলম। তাদের বাড়ি বিহারের সুপাল জেলার রামবিষ্ণুপুর গ্রামে। তারা উভয়ই কাশ্মীরের রাম্বান জেলায় কাঠমিস্ত্রীর কাজ করে।
পুলিশ বলছে, তারা ওই দুই বোনের প্রেমে পড়েছিল। অপহরণের পর তারা ওই দুই বোনকে বিয়ে করার পর নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসে। এদিকে মেয়েরা নিখোঁজ হওয়ার পর তাদের বাবা স্থানীয় থানায় অপহরণের মামলা করে। মামলায় তিনি বলেন, তার মেয়েদের বিহারের ওই দুই ভাই অপহরণ করেছে।
বিহারের বিদ্যাসাগর জেলার পুলিশের সহকারী এসপি এনডিটিভিকে বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর থেকে একদল পুলিশে এখানে এসে তাদের গ্রেফতার করেছে। তবে অভিযুক্ত ওই অপহরণকারী বলেছে, তারা কাশ্মীরি ওই মেয়েদের সম্মতিতে তাদেরকে বিয়ে করেছে।’
গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধান থেকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত অনুচ্ছেদ তুলে দেয়া হয়। সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের আগে কাশ্মীরের কোনো মেয়েকে ভারতের অন্য প্রদেশের কেউ বিয়ে করতে পারতো না। আর করলেও বিবাহিত সেসব নারী কাশ্মীরের সম্পত্তি ওপর অধিকার হারাতেন।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ও ৩৫ (ক) অনুচ্ছেদ বাতিলের আগে বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত জম্মু-কাশ্মীরের মেয়েরা তাদের রাজ্যের বাইরে বিয়ে করতেই পারতেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বিয়ের পরে তারা বাপেরবাড়ির সব সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হতেন। জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় বঞ্চিত হওয়ার পর্ব এখন বাতিল।
গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। শুধু বিশেষ মর্যাদা বাতিল নয় কাশ্মীরকে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়।
কাশ্মীর নিয়ে গোটা ভারতের রাজনীতি এখন উত্তাল। বিজেপিসহ ভারতীয়রা কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত উদযাপন করছেন। কাশ্মীরিরা যাতে এর কোনো প্রতিবাদ করতে না পারে তাই সেখানে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানকার মানুষ এখন সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ।
-এটি