আওয়ার ইসলাম: কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ‘আর্টিকেল ৩৭০’ বাতিলের প্রতিবাদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকে দেশটিতে গণবিক্ষোভে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে আসেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানী ইসলামাবাদেরর কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউতে সরকারি কার্যালয়ের সামনে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হন। পাকিস্তান ও কাশ্মীরের জাতীয় সঙ্গীত সম্প্রচারের পর দেশজুড়ে সাইরেন বেজে ওঠে। এসময় বিক্ষোভের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কয়েক মিনিটের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে।
এখানেই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ইমরান খান বলেছেন, ভারতীয় বাহিনীর যে নিপীড়ন কাশ্মীরিদের ওপর নেমে এসেছে, বিশ্বকে অবশ্যই তার স্বীকৃতি দিতে হবে ও নিন্দা জানাতে হবে।
ইমরান খান বলেন, আমাদের বিজেপি ও আরএসএসের রাজনীতি বুঝতে হবে। আরএসএস মনে করে হিন্দুরা সবার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তাদের ইশতেহার হচ্ছে- হয় মুসলমানদের ভারত থেকে বের করে দেও, নতুবা তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানিয়ে দাও। নাৎসিবাদীরা যেভাবে জার্মানিকে জিম্মি করে রেখেছিল, আরএসএসের মতাদর্শও সেভাবে গ্রহণ করেছে ভারত।
‘কাশ্মীরিদের পক্ষে ইতিমধ্যে বিশ্বের দাঁড়ানোর কথা ছিল, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ধর্ম এখানে একটি পরিচয়সূচক ভূমিকা রেখেছে,’ বললেন সাবেক এ ক্রিকেট কিংবদন্তি।
তার মতে, মুসলমানরা যখন নিপীড়িত হয়, দুর্ভাগ্যবশত বিশ্ব তখন নীরব থাকতে চায়। কাশ্মীরের অধিবাসীরা যদি মুসলমান না হতেন, তবে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া আরও জোরালো হতো।
‘আমরা বিশ্বকে সতর্ক করছি যে, আজাদ কাশ্মীরে ভারত গুরুতর কিছু করবে। আমি অবশ্যই মোদিকে হুশিয়ারি দিয়ে বলছি- ভারত যদি দুরভিসন্ধিমূলক কিছু করতে চায়, পাকিস্তান সর্বশক্তি দিয়ে তার মোকাবেলা করবে।’
তিনি বলেন, বিশ্বকে বোঝা দরকার যে, ভারতীয় বিষাক্ত মতাদর্শে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকে আক্রান্ত হবেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যেকোনো সংঘাতে সারা বিশ্বের জন্য বিপর্যকর হবে।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী মাসে ইমরান খানের নিউ ইয়র্ক সফরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে কাশ্মীরে ভারতীয় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানে। চলতি শুক্রবারে সেই ধারাবাহিকতার প্রথম বিক্ষোভটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কাশ্মীরে অশান্তি এড়াতে নিরাপত্তা কড়াকড়ি বাড়ায় কেন্দ্র। সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি জারি হয় কারফিউ। রাশ টানা হয় সংবাদ মাধ্যমেও। গ্রেফতার হন প্রায় কাশ্মীরের প্রায় ৪শ’ নেতা।
আরএম/