আওয়ার ইসলাম: ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদেশ থেকে দুইশ টন মশার লাভা ধ্বংসের ওষুধ এনেছেন গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। নিজের এলাকা ছাড়াও দেশের যে কোনো প্রান্তের প্রতিষ্ঠান বা মানুষ চাইলে বিনামূল্যে এ ওষুধ দেবেন তিনি।
মেয়রের দাবি, এই ওষুধ ডেঙ্গুর বাহক এডিস ইজিপ্টি মশার লার্ভা ধ্বংস করে দিতে পারে। চলতি মাসের শুরুর দিকে সিঙ্গাপুর থেকে ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে তৈরি এ ওষুধ আনানো হয়েছে।
গাজীপুরের মেয়ারের একটি ভিডিও বার্তায় বিনামূল্যে ওষুধ দেয়ার ইচ্ছার কথা জানান। এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
মেয়র বলেন, রাজধানী ও গাজীপুরসহ দেশে প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষ উদ্বিগ্ন। রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এ রোগের প্রকোপ বেশি। তাই আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এডিস মশা ও লার্ভা নিধনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং পরীক্ষিত প্রথমে ২৫ টন এনেছিলাম।
‘পরে দুবার ৫০ টন করে কার্যকরী ওষুধ সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করেছি। এখন আমার কাছে প্রায় দুইশ টন ওষুধ আছে। এছাড়াও স্প্রে এনেছি। এক ধরনের ট্যাবলেট আছে যা পানির মধ্যে দিয়ে লার্ভা জিরো করা যায়। এগুলো সব আন্তর্জাতিক মানসম্মত।’
এ ওষুধ কোনো সরকারি বা সিটি করপোরেশনের টাকায় নয়, নিজের টাকা খরচ করে আনা হয়েছে বলেও জানান মেয়র জাহাঙ্গীর।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে কোনো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা আগামী একমাস আমার কাছ থেকে এই ওষুধ নিতে পারবেন। গাজীপুরের পাশাপাশি অন্যদেরকেও আমি সহযোগিতা করতে চাই। যে কোনো লোক বা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন হলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন আমি বিনা টাকায় দেব।
‘আল্লাহ আমাকে তাওফিক দিয়েছেন। সেই হিসেবে মনে করি, একটা উসিলা হিসেবে আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই।’
এই ওষুধ পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে না জানিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, ইতিমধ্যে সাতটি সিটি করপোরেশন ও ১৪৫টি পৌরসভায় এই ওষুধ দিয়েছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ ঢাকার অনেক জায়গায় দিয়েছি। আমরা চাই গাজীপুরসহ অন্যান্য জায়গার মানুষও যাতে নিরাপদে থাকে।
উল্লেখ্য, মেয়র জাহাঙ্গীর এর আগেও নানা সময় নিজের পয়সায় জনকল্যাণমূলক নানা উদ্যোগ নিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ব্যবহার করা মশার ওষুধের অকার্যকারিতার বিষয়টি সামনে আসে। আর বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ানোর পর নগর কর্তৃপক্ষ ওষুধ পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
দুটি দেশ থেকে ওষুধের নমুনা এনে পরীক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি বাসা বাড়িতে লার্ভা ধ্বংসের অভিযান চলছে।
আবার ডেঙ্গু এখন সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। ঈদের আগের তুলনায় প্রকোপ কিছুটা কমলেও এখনো প্রতিদিন এক হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক সারাদেশ জুড়ে।
-এএ