বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


একদিনে ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানী ঢাকা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর ও খুলনায় তাদের মৃত্যু হয়।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ঢাকায় ফাতেমা নামে এক নারী, সামিয়া নামে এক শিশু, খুলনার রূপসা উপজেলার খাঁজাডাঙ্গা গ্রামের সবজি বিক্রেতা মিজানুর রহমান, নেত্রকোণার কেন্দুয়ার আব্দুল লতিফের ছেলে আনোয়ার হোসেন, ফরিদপুর সদরের নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীচর গ্রামের শেখ শফিউদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।

বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমাইয়া আক্তার এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাসেল মিয়া নামে কিশোরগঞ্জের এক যুবক।

চলতি বছরে ডেঙ্গুতে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তার হালনাগাদ সরকারি হিসাব নেই। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সে হিসেবে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৯ জনে উন্নীত হলো।

ঢাকায় দুজনের মৃত্যু
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।

সামিয়া নামের আট বছর বয়সী মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। গত ১০ আগস্ট সামিয়াকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।

এদিকে পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে ডেঙ্গুতে মারা গেলেন ফাতেমা আক্তার (৪৫) নামে আরও একজন। এই নিয়ে এ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল সাতজনে।

জানা যায়, ফাতেমা আক্তার গত রবিবার জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সোমবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দরে।

বরিশালে তরুণীর মৃত্যু

বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুমাইয়া আক্তার (২০) নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি গত ১৬ আগস্ট ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সুমাইয়া আক্তার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

খুলনায় যুবকের মৃত্যু

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক (আরপি) শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, মিজানুর বৃস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সোমবার সকাল ৭টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত খুলনায় এক বৃদ্ধাসহ পাঁচজনের জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জেলার সিভিল সার্জন এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনায় সোমবার পর্যন্ত ৫৭৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৮৯ জন, যাদের ২০ জন সোমবার এসেছেন।

ময়মনসিংহে নেত্রকোণার যুবকের মৃত্যু
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার জানান, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আগের দিন দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আনোয়ার সোমবার ভোরে মারা যান। তিনি বলেন, ‘আনোয়ার কয়েকদিন নেত্রকোণা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শরীরের বিভিন্ন অর্গানের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলার কারণে তার মৃত্যু হয়।’

লক্ষ্মী নারায়ণ জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেলে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এপর্যন্ত হাসপাতালে মারা গেছের তিনজন।

গত ২৪ জুলাই থেকে সোমবার পর্যন্ত মোট এক হাজার ৬০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ৮৮৩ জন। এখন চিকিৎসাধীন আছেন ১৭৪ জন।

ফরিদপুরে একজনের মৃত্যু
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা জানান, দেলোয়ার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রবিবার ভর্তি হন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

দোলোয়ারের বাবা শফিউদ্দিন শেখ বলেন, তার ছেলেকে প্রথমে ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। দেলোয়ার ফরিদপুর শহরের পূর্বখাবাসপুর মসজিদের খাদেম হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫৭ জন ভর্তি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ফরিদপুরের এ রোগে ভর্তি রয়েছে ৩৪৬ জন রোগী। এ পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয় ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো বলে কামদা প্রসাদ জানান।

কিশোরগঞ্জে একজনের মৃত্যু
রাসেল নামের এক যুবক গত ১৫ আগস্ট কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে রবিবার দুপুরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাতেই তার মৃত্যু হয়।

নিহত রাসেল মিয়া পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটেকি গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে। তিনি রাজধানীর কেরানীগঞ্জে দর্জির কাজ করতেন। দুটি সন্তান রয়েছে তার।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ২১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট ১১১ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সবমিলিয়ে জেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭৩ জনে। তাদের মধ্যে ১২০ জন রোগীকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ