জহির উদ্দিন বাবর । ।
বাংলাদেশ আর ভারত পাশাপাশি রাষ্ট্র। এখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘু আর ওখানে মুসলিমরা। এখানে ১২ শতাংশ সংখ্যালঘু, সরকারি চাকরিতে তারা দখল করে আছেন ২৫ শতাংশ পদ। আর ওখানে ১৪ শতাংশ মুসলিম, সরকারি চাকরিতে তাদের অংশ মাত্র এক শতাংশের একটু বেশি।
স্বাধীনতার ৪৮ বছরে ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন ঘটনা সম্ভবত এক-দুটিও নেই। কোনো হিন্দুকে জোর করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলানো হয়েছে এমন ‘কুনজির’ একটাও পাওয়া যাবে না। ভারতে শুধু মোদি সরকারের আমলেই ধর্মীয় কারণে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে শত শত। প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারা হয়েছে অনেককে। জোর করে তাদের দেব-দেবীর নামে স্লোগানে বাধ্য করার মতো ঘটনা তো গত কয়েক মাসেই ঘটেছে অসংখ্য।
যারা কথায় কথায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা বলেন তারা একটু চোখ বুলিয়ে দেখে আসবেন ভারতে। সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমরা রাষ্ট্রের কয়টি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত? খুঁজে বের করতে বেগ পেতে হবে। আর বাংলাদেশে এখন প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সংসদ পর্যন্ত তাদের উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
মাত্র সেদিন শিল্পকলা একাডেমি পদক দিয়েছে সরকার। এবার পদকটি পেয়েছেন সাতজন। এর মধ্যে ছয়জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। ৯০ ভাগ মুসলমানের প্রতিনিধি হিসেবে মাত্র একজন ‘সৌভাগ্যবান’ পেয়েছেন পদকটি। কই এটা নিয়ে কেউ কি কোনো প্রশ্ন তুলেছে! সুতরাং বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যতটা সুবিধা ভোগ করছে, তারা যতটা দাপটের সঙ্গে সবখানে বিচরণ করছে তা অনেক ক্ষেত্রে সংখ্যাগুরু মুসলিমরাও পাচ্ছেন না।
ভারতবর্ষ মুসলিমরা শাসন করেছে প্রায় হাজার বছর। ভারতের প্রতিটি ধূলিকণার সঙ্গে মিশে আছে মুসলিম ঐতিহ্য। দু’শ বছর ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে মূল লড়াইটা চালিয়েছেন মুসলিমরা। দেশের জন্য ত্যাগের কথা বললে এখানকার সংখ্যালঘুদের চেয়ে ওখানকার সংখ্যালঘুরা অনেক এগিয়ে। অথচ প্রাপ্তি আর অধিকারের বিচারে ওখানকার সংখ্যালঘুরা কতটা পিছিয়ে!!
লেখক : সভাপতি, ইসলামী লেখক ফোরাম
(ফেসবুক থেকে নেওয়া)