শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র

বিয়ে নামক 'প্যারা' কী দরকার?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ওমর আলী আশরাফ
আলেম

একটা সময়ে পর্নোগ্রাফি ছিল না, হলিউড বলিউড ছিল না, রাস্তায় নারীর উন্মুক্ত প্রদর্শন ছিল না, তবু সে সময় ছেলের বয়স ১২ গড়ালেই বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে যেত। কী বলো, চৌদ্দ বছর বয়েস ছেলের, বিয়ে করেনি! গেল, গেল, সব গেল।

এখন যুগ পর্নোগ্রাফির, লিভ টু গেদার ফ্রি-সেক্সের। আপনি স্বচ্ছ থাকতে চাইবেন, চারপাশ আপনাকে ছেড়ে দেবে না। আমার ধারণা ছিল, এত কিছুর পরেও মাদরাসা অঙ্গন তো আছেই, খোদ কলেজেও কিছু ছেলে-মেয়ে পাওয়া যাবে, যারা সবদিক থেকে স্বচ্ছ।

"মানসাঙ্ক" বইতে ধর্ষণের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো পড়ার পর, পুঁজিবাদের কৌশলগুলো যৌনতার সঙ্গে জড়িত দেখার পর এই ধারণা আমার বদলে গেছে। কেউ যদি চাহিদা নিবারণের উপকরণ না পায়, অন্তত নিজে নিজে ঠাণ্ডা হয়ে নেবে।

ব্যাপারটা আরও বুঝিয়ে বলি। একজন ছেলে বালেগ হয় সাধারণত চৌদ্দ বছর বয়েসে, সর্বনিম্ন বারো। এই কালে পনেরো বছর বয়সের পরে শরিয়ত কাউকে নাবালেগ বলে না।

ধরলাম একজন ছেলে পনেরো বছর বয়সে বালেগ হলো, মডার্ন ফ্যামিলি হলে চৌত্রিশ পঁয়ত্রিশ এবং দ্বিনি ফ্যামিলি হলে চব্বিশ পচিশ বছর বয়সে বিয়ে করানো হচ্ছে। অর্থাৎ বালেগ হওয়ার পর দশ থেকে বিশ বছর পর্যন্ত একটা ছেলে একা থাকছে।

স্বাভাবিক নিয়মে সপ্তাহে অন্তত একবার তার চাহিদা হবেই। আমাদের এখনকার পরিস্থিতিতে তো দিনে চার-পাঁচবার চাহিদা জাগাও আশ্চর্যের কিছু না।

বুঝলাম সে এক সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ করে এক মাস, দুই মাস নিজেকে কন্ট্রোল রাখল, তারপর? না চাইলেও তার সঙ্গে কিছু দুষ্ট বন্ধু জুটে যাচ্ছে, না চাইলেও টিভিতে ইউটিউবে নারীর উদ্ভট প্রদর্শন দেখছে, না চাইলেও পত্রিকায় নারীর রসালো উপস্থাপন পাচ্ছে, না চাইলেও রাস্তায় বের হলে উগ্র নারীর বিচরণ দেখছে, এগুলো উদ্দীপক, একটু একটু ডোজ নিয়ে মেন্টাল সেট-আপ দিচ্ছে। ঠিক একই ব্যাপার মেয়েদের ক্ষেত্রেও। এবার বলুন, কত দিন সে কন্ট্রোল থাকতে পারবে? সে চেষ্টা করলেও শয়তান দেবে না।

সুতরাং সে প্রেমের নামে মেয়ে-সম্ভোগে মাতবে, পতিতা খুঁজবে, সে সমকামে বিকৃত হবে, ধর্ষণে লিপ্ত হবে, অন্তত নির্জনে একা যা করার করবে।

ছোটবেলা থেকে একটা হাদিস শুনে আসছি, (আমার তাহকিক নেই, কেউ হাওলাসহ জানালে উপকৃত হব), সন্তান বালেগ হবার পরে যদি বাবা-মায়ের অবহেলায়—যেমন বিয়ে না করানোয় সে পাপে লিপ্ত হয়, এর দায়ভার বাবা-মাকে বহন করতে হবে। কেয়ামতের দিন আল্লাহ এর জন্য বাবা-মাকে পাকড়াও করবেন।

পশ্চিমা সংস্কৃতির আপডেট তো এখন বিয়ে লাগে না, আল্লাহ পানাহ, কবে জানি এই রীতি আমাদের দেশেও ব্যাপক হয়ে যায়!

পশ্চিমের পুঁজিবাদী সভ্যতা আমাদের শিখিয়েছে, যৌনতা বিয়েশাদী এইসব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না, তুমি নিজের লাইফ শাইন করো, তোমার প্রয়োজন সময়মতো মিটে যাবে। প্রেম, পরকীয়া, লিভ টু গেদার, ফ্রি-সেক্স—এইসব তো স্মার্টনেস!

এগুলো লেখাপড়ার জীবনে, চাকুরির জীবনে, লাইফ সেটেলের জীবনে যেকোনো মুহূর্তেই সেরে নিতে পারছো, সুতরাং বিয়ে নামক 'প্যারা' কী দরকার? তোমার লাইফ অনেক বড়, দেশের সম্পদ তুমি, বিয়ে করে সীমাবদ্ধ হয়ে যাওয়া তোমার জন্য বেমানান।

আমাদের বাবা-মা আত্মীয়-সোসাইটিও এখন বলে, আগে তুমি ক্যারিয়ার গড়ো, লাইফ শাইন করো, তারপর বিয়ে। এখন বলুন, বালেগ হওয়ার পর দশ থেকে বিশ বছর পর্যন্ত যে ছেলেটা নোংরা সভ্যতার বাসিন্দা, কী করে সে পাপমুক্ত থাকবে?

এ যুগটা তো আপনাদের হ্যারিকেন, কুপির যুগ না, এটা আমাদের পর্নোগ্রাফি, হলিউড-বলিউডের যুগ, কী করে আমরা গ্যারান্টি দিতে পারি হে বাবা-মা, আমাদের কারণে আপনাদের জাহান্নামে পুড়তে হবে না!

ফেসবুক থেকে নেওয়া

আরএম/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ