মোস্তফা ওয়াদুদ
আওয়ার ইসলাম
ভারতের ঐতিহাসিক দীনি বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভবিষৎবাণী অনুয়ায়ী সব জামানা এবং সময়ে ফেতনা থাকবেই। মানুষকে বেঈমান বানানোর নীল নকশা চালানো হবে। ছলে বলে কৌশলে মানুষকে বিপথগামী করার অপচেষ্টা চালানো হবে।
তিনি বলেন, সবসময় সরলমনা মানুষের ঈমান নিয়ে খেলা করবে এক শ্রেণির ভ্রান্ত আকিদার পেট পূজারী দল। তাদের ফেতনার মোকাবেলা করার দায়িত্ব তোমাদের। তোমরা সাধারণ মুসলমানদের এসব ফেতনা সম্পর্কে সতর্ক করবে। সর্বোপরি উম্মতে মুসলিমার ঈমান আকিদা হেফাজত করার দায়িত্বও তোমাদের।
গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) দারুল উলুম দেওবন্দের দাওরায়ে হাদীস (তাকমিল) শ্রেণীকক্ষে ৬ দিনব্যাপী তরবিয়তী কর্মশালার উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দারুল উলুমের ফারেগীনদের উদ্দেশে মুফতি আবুল কাসেম নোমানী বলেন, মানুষকে হকপথে পরিচালনা করা ও ভ্রান্তপথ থেকে ফিরিয়ে রাখার জিম্মাদারী দারুল উলুম দেওবন্দের ফারেগীন সকল ওলামা ও ফুজালাদের। বিশ্বের বুকে চলমান সকল ফেতনার মোকাবেলায় দারুল উলুমের ফুযালাদের এগিয়ে আসতে হবে। অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। চাই সে যে প্রদেশের কিংবা যে দেশেরই হোক না কেনো।
এসময় দারুল উলুম দেওবন্দের সদরুল মুদাররিস ও শায়খুল হাদিস মুফতী সাঈদ আহমদ পালনপুরী বলেন, আমরা সবাই নবী করীম সা. এর উত্তরসূরী। আর উত্তরসূরীর কাজ সেটাই হয় যেটা পূর্বসূরীর হয়। আমাদের পূর্বসূরীগণ দীন প্রচারের সাথে সাথে এর হেফাজতও করেছেন। সুতরাং, দীনের ভেতরে- বাইরে যে কোনো ধরনের ফেতনার মূলোৎপাটন করা আমাদের জিম্মাদারী। ফেতনার মোকাবেলায় ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
তরবিয়তী প্রোগ্রামের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা আলমগীর খাজুড়ী তারবিয়তী কর্মশালার উদ্দেশ্য বর্ণনা করে বলেন, বিশ্বের আনাচে-কানাচে লক্ষ লক্ষ দারুল উলুমের ফারেগীন ফুজালা রয়েছে। তারা নিজ নিজ এলাকায় মুসলিম উম্মাহর ঈমান আকিদার হেফাজত ও ইসলাম বিরোধী কার্যক্রমের মোকাবেলা করে যাচ্ছেন। তাদের এ কার্যক্রমকে কিভাবে সুন্দর ও গোছালো করা যেতে পারে সেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়াই হলো এ কর্মশালার লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, দারুল উলুম দেওবন্দে প্রতিবছর 'কুল হিন্দ মজলিস তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত' এর উদ্যোগে ছয় দিনব্যাপী এ তারবিয়তী কর্মশালার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এতে বিভিন্ন বিষয়ের পণ্ডিত ও বোদ্ধামহল বিভিন্ন গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন।
দারুল উলুমের বার্ষিক পরীক্ষার পূর্বে কর্মশালায় অংশ নেয়ার বিজ্ঞপ্তি লাগানো হয়। সেখানে আবেদন ফরম পূরণ করে প্রাথমিক যাচাইয়ের পর শুধু ফারেগীনদেরকে কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করা হয়ে থাকে। এ বছরও সারাদেশ থেকে প্রায় চারশো ফুযালা কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন।
উক্ত কর্মশালা হলরুমের বাইরেও প্রজেক্টরের মাধ্যমে দরস প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। আগামী মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কর্মশালার শেষ ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে।
এ তরবিয়তী কর্মশালা বাস্তবায়নে কুল হিন্দ মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত এর সদস্যগণ ও দারুল উলুমের নির্বাচিত কয়েজন আসাতিযায়ে কেরাম ভূমিকা রাখছেন। তাদের সাথে মুম্বাইয়ের ড. মুহাম্মদ আজীজ, মাওলানা শাহেদ আনওয়ার বারাবানকী, কেরালা প্রদেশের মাওলানা বাদশাহ কাসেমী ও গুজরাতের মাওলানা মুহাম্মদ মাজহারও রয়েছেন।
আরএম/