মাহমুদা নুসরাত
আমি জানি তার বন্ধু তালিকায় অনেক কামেল মুস্তাজাবুদ দাওয়াত আছেন, আমার প্রিয়র জন্য আপনাদের দুয়া ভিক্ষা চেয়ে আপনাদের কদমে অনুরোধ করছি। মাত্র ১১ বছর বয়সে তার কাছে এসেছি, তার কয়েকদিন পরে বাবাকে হারিয়েছি, তিনি আগলে রেখেছেন। এরপর একে একে নানা, দাদা, ফুফু, খালু, বোন, ননদসহ অনেক আপনজন হারালাম, তিনি মায়ার চাদরে জড়িয়ে আমায় কিছুই বুঝতে দেননি।
সম্প্রতি তার বাবা-মা দুইজনই বিছানায়, তবুও তার মধুর আলাপে সব স্বাভাবিকই চলছে। আজ যুগের পর যুগ পার হলো, কষ্ট কি জিনিস তিনি আমায় বুঝতে দেননি। আমার সুখের জন্য তিনি সব করছেন অথচ আমি কত অসহায়, তার যন্ত্রণার সামান্য ভার বইবারও ক্ষমতা নাই।
মাস খানেক ধরেই তিনি অসুস্থ, তবুও বসে থাকার মানুষ নন, এক্সিডেন্টের পরেও তিনি প্রোগ্রাম বাদ দেননি। প্রোগ্রামের জন্য সাধারণত তিনি কন্টাক্ট বা চুক্তি করেন না।
তারপরও তিনি তো মানুষ গত ১৫ দিন ধরে বিছানায় পড়ে আছেন। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রোগ্রামে যেতে অপারগতার কথা জানাতেই মানুষের রিয়েক্ট দেখে থ হয়ে যাই।
তিনি বক্তা বলে কি নিজেকে বেচে দিয়েছে? কেউ কেউ আবার তুলে নিয়ে... বলার রুচি হয়না।
একজন মধ্যম সারির হকপন্থী বক্তাকে তারা কি দেয়? পরিবার,সন্তান সব ছেড়ে সারাদিন জার্নি করে কি পায়? কিছু নিচু জাত আছে তারা বলে মাত্র দেড় দুঘন্টার লেকচার।
ওই সামান্য সময় কথাবলার জন্য কত যে অধ্যায়ন করতে হয় তা আমি আমার স্বামীর সাথে বহু রাত জাগার সাক্ষী।
কিন্তু প্রোগ্রাম থেকে আসার পথে এক্সিডেন্ট করে যে ক্ষতি হয়েছে তা কি কোন কমিটি দিয়েছে? কিংবা আমার কলিজার ধন যুবক স্বামীর সেই অক্ষত শরীর পারবে কেউ ফিরিয়ে দিতে?
আমার সকল অলংকার একের পর এক বেচতে বেচতে আজ কপর্দকশূন্য। ছোট্ট মামনিদের জন্য তিনি শখ করে সৌদি হতে এত বছরে যত গহনা এনে ছিলেন, তা আজ সব একত্র করে স্বর্ণকারের হাতে তুলে দিয়ে শুধু অশ্রু সাথে নিয়ে ঘরে ফিরলাম।
তাকে নিয়ে ক্লিনিক মেডিকেলে শহর-বন্দর কত জায়গায়গায় যেতে হল, খালি নতুন নতুন পরীক্ষা আর নতুন জায়গায় রেফার। এখন জল খাবারেরও সাধ্যটুকু শুষে খেয়ে বিদেশের কথা!
এখন কোন কিছুর সাধ্যই নাই, এতদিন যে ঋনের পাহাড় হয়েছে ইতিমধ্যে পাওনাদারদের বাড়িতে হানা শুরু হয়ে গেছে।
সম্ভ্রম বাঁচানোর মালিক আল্লাহ
তিনি সহজে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করেন নি। আল্লাহই তার ভরসা। তিনি অচল হলে কি শুধু আমি নিঃস্ব হব? না বরং অনেক ছোট ছোট নিষ্পাপ বাচ্চার দায়িত্ব তার কাঁধে এতিম অসহায় গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের খাদ্য বস্ত্র শিক্ষকদের বেতনসহ আরো বিভিন্ন বিষয়ই যে আটকে আছে। ঋনের বোঝা বৃদ্ধি পেতে থাকলে কি হবে এই নিষ্পাপ শিশুদের।
তার মাদরাসার প্রতিটি ছাত্র শিক্ষক কারো চেহারার দিকে আজ তাকানো যায় না। নিজের সবচেয়ে ছোট্ট শিশুটি বাবার বুকে উঠে কেঁদে কেঁদে বলছে আব্বু, ‘আম্মু আমার হার নিয়া গেছে’। তখন হৃদপিণ্ডটা কেঁপে ওঠে, এ দৃশ্য কেমনে সই!
আমি আপনাদের দীনি বোন হিসেবে আপনাদের কাছে খাছ দুয়া চাই যেন তার সকল ঋন মুক্ত হবার ব্যবস্থা আল্লাহ করে করেন, এবং আল্লাহ নিজ কুদরত দিয়ে তাকে পূর্ণ শিফায়ে আজেলা কামিলা দান করে।
হাফেজ হাসনাইন মাহমুদ
MSA/C No
২০৫০১১১০২০ ৪৫৭১৫১৩
বরিশাল শাখা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ।
বিকাশ পার্সোনাল: ০১৭২৪৭৬৭২১০, ০১৮৪২৭৬৭২১০
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
-এএ