আওয়ার ইসলাম: ওয়াজ মাহফিল ও বক্তাদের নিয়ন্ত্রণের সরকারি চেষ্টা দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, মুসলিম মেজরিটির ধর্মীয় চেতনা এবং মূল্যবোধবিরোধী। যদি কোনো বক্তার আলোচনায় সরকার বিব্রত হন, তবে সরকার তাকে সতর্ক করতে পারেন, তার বয়ানের ব্যাখ্যা তলব করতে পারেন। তা না করে পুরো ওয়াজের মাঠকে দোষারোপ করা গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এ দেশের ৯০ ভাগ মানুষ বুকে ইসলামকে লালন করেন। দেশের রাষ্ট্রধর্মও ইসলাম। সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে। ইসলামের প্রচারার্থে ওয়াজ মাহফিলে বাধা প্রদান বা শরিয়তসম্মত কোনো বক্তব্যকে হেয় করা বা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা প্রকারান্তরে ইসলামেরই বিরোধিতা করার শামিল। এটা সরাসরি ইসলামের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ।
মাওলানা আজিজুল হক আরো বলেন, আলেমরা যদি কোরআন হাদিসের বিধানের কথা বলে আর তা সরকারের বিরুদ্ধে যায় তাতে বক্তার অপরাধ কোথায়? যেমন, ছবি টাঙানো, ভাস্কর্য তৈরি, ঘুষ, সুদ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অন্যায়ভাবে গুম ও খুন করা, নাস্তিকতা ও কাদিয়ানীবাদ ইসলামের বিধানমতে হারাম। এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলা আলেমদের দায়িত্ব।
আর মাহফিলে এসব বললে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের কারো গায়ে লাগে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বক্তা ও মাহফিলের ওপর আঘাত করার চেষ্টা করেন, যা অহরহ ঘটছে।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ করছি, কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল তাদের বিভিন্ন প্রতিবেদন, টকশোতে ইসলামের অনেক বিধানাবলি নিয়ে ঠাট্টা, বিকৃত, উসকানিমূলক, সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার করে।
দাড়ি-টুপি, পর্দা-হিজাব, মাদ্রাসা, আলেম-ওলামাদের হেয় ও চরিত্র নষ্ট করে নাটক সিনেমা তৈরি করে তা প্রচার করছে। যাতে ধর্মপ্রাণ জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। আগে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের কর্তব্য।
তিনি আরো বলেন, মাহফিলে আলেমসমাজ হালাল-হারাম, ন্যায়-অন্যায়, নীতি আদর্শ, নৈতিক চরিত্র, দেশ ও মানবতার কল্যান, নারীর নিরাপত্তা, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় কুরআন হাদীসের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান রাখেন।
এর দ্বারা দেশ ও নাগরিকসমাজ উপকৃত হচ্ছে। দেশে শান্তি ও মানুষের চরিত্র সংশোধনে আলেমসমাজের অবদান চির স্মরণীয়।
-এএ