আওয়ার ইসলাম: ময়মনসিংহে মাদরাসা শিক্ষকের মারধরে আহত ছাত্র তাওহিদের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত ১২টায় ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাওহিদ মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
মামলার পর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষককে পুলিশ আটক করেছে এবং মারধর করা শিক্ষক আমিনুল ইসলাম (২৫) পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
তাওহিদের পরিবার জানায়, উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের কয়েস মিয়ার ছেলে তাওহিদকে ৪ বছর আগে জামিরদিয়ার এলাকার ওমর ফারুক রা. হাফিজিয়া কিন্ডারগার্টেন মাদরাসায় ভর্তি করা হয়।
গত ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি তাওহিদের শিক্ষক হাফেজ আমিনুল ইসলাম তাওহিদকে দেড় পারা কুরআন শরিফ পড়তে দেন। সে ৭ পৃষ্ঠা মুখস্ত শুনানোর পর বাকিটুকু না শুনাতে না পারার কারণে শিক্ষক আমিনুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে তাওহিদকে প্রচণ্ডকারে প্রহার করেন। এতে তাওহিদের বাঁম পা, হাত ও বুকের বাম পাশের পাঁজরের হাড় ভেঙে যায়।
পরে ওই শিক্ষক তাওহিদকে মাদরাসায় রেখে চিকিৎসা দেন। কিন্তু তাতে তাওহিদের কোনো উন্নতি না হওয়ায় তার পরিবারকে খবর দিয়ে বলা হয়, তাওহিদ খেলতে গিয়ে আঘাত পেয়েছে।
তাওহিদের পরিবার তাকে প্রথমে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে শুক্রবার ময়মনসিংহের কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এরপর তার অবস্থা আশংকাজনক হলে রোববার দুপুরে তাওহিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢামেক থেকে রাতে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে পাঠালে রোববার রাত ১২টার দিকে তাওহিদ মারা যায়।
তাওহিদের মা হাসনা হেনা জনান, ৩ সন্তানের মাঝে তাওহিদকে হাফেজ বানাতে চেয়েছিলাম। আমার ছেলে ১৮ পারা কুরআন মুখস্ত করেছিল। শিক্ষক আমার ছেলেকে মেরে বাঁম পা, হাত ও বুকের পাজরের হাড় ভেঙে ফেলেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে সে আঘাতের চিহ্ন আছে।
তাওহিদের বাবা কয়েস মিয়া জানান, মাদরাসা শিক্ষক আমিনুল ইসলাম আমার ছেলেকে পিটিয়ে আহত করে তাদের কাছে রেখে ৩-৪ দিন চিকিৎসা করে ভালো করতে না পেরে আমাকে খবর দিয়ে বলে, তাওহিদ খেলতে গিয়ে পায়ে আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
তাওহিদকে মাদরাসা থেকে এনে প্রথমে ভালুকাতে, পরে চুরখাই হাসপাতালে, সর্বশেষ ঢাকা মহাখালী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রোববার রাতে মারা যায়।
ভালুকা মডেল থানার ফিরোজ তালুকদার জানান, শিক্ষকের পিটুনিতে ছাত্র আহত হওয়ার পর উপযুক্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় তাওহিদ মারা গেছে।
-আরএইচ