আওয়ার ইসলাম: ২০১৪ সালের নির্বাচনের যে তাণ্ডব হয়েছে এবারের নির্বাচনে সেটার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভবনের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সমন্বয় সভার সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গত দুই দিনে নির্বাচনি প্রচারের সময় সহিংসতার ঘটনা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পুনরাবৃত্তির পায়তাঁরা কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সেটার আলোকে আমাদের এই নির্বাচনে প্রস্তুতি নিতে হবে। ওই নির্বাচনে আমরা কি দেখেছি, মাঠে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও প্রশাসনের লোক থাকা সত্ত্বেও প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ সদস্য ও অন্যান্য সদস্যদের নিহত হতে হয়েছে। শত শত মানুষের প্রাণ গেছে। শত শত প্রতিষ্ঠান ভস্মিভূত হয়েছে। এখানে যারা পুলিশ প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যান্য সংস্থার লোক রয়েছেন, তারা যেন জনগণের ভোটের জানমাল এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেন সে ব্যাপারে আপনাদের নির্দেশ দিচ্ছি।’
কেএম নুরুল হুদা বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের পরের দিন নির্বাচনি প্রচারণায় দুটি প্রাণ হারানোর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা কি শুধুই রাজনৈতিক ঘটনা নাকি ২০১৪ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তির পায়তারা। এসব ঘটনার খোলস থেকে সকলেরই বের হয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক দল ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সচেষ্ট থাকতে হবে, সহিংসতা সৃষ্টির ঘটনার মধ্যে কোনো তৃতীয় শক্তির ষড়যন্ত্র চলছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততার সৃষ্টি হয়েছে। ঠিক এমন সময় মানুষ খুনের ঘটনা, হামলার ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করার কোনও কারণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে কয়েকটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করতে চাই। কারণ মাস্তানদের হাতে ভোটারদের সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়া যায় না। ব্যালটবাক্স ছিনতাইকারীর হাত থেকে ভোটারদের মুক্তি দিতে হবে। বর্তমানে যে পদ্ধতিতে ভোট চলছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ভালো হবে ইভিএম পদ্ধতি। ইভিএম একটি বিকল্প পদ্ধতি, যার মাধ্যমে ভোটারদের ভোটের নিশ্চয়তা থাকবে। যেখানে ইভিএম ব্যবহার হবে ওইসব এলাকায় আলাদা নজর দেওযা এবং আলাদাভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। ইভিএম সবখানে প্রয়োগ করা হলে এদেশের নির্বাচনের ৮০ ভাগ অনিয়ম কমে আসবে বলে মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমগ্র নির্বাচন ভালোভাবে শেষ করতেই আমাদের সকল আয়োজন। আনসার, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, গোযেন্দা সংস্থা সকলেই দায়িত্বশীল জায়গায় কাজ করবেন। তার বাইরে প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। সকলকে একটা কথাই বলব, সবাই মিলে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে ভোট শেষ করতে হবে।’
সিইসি বলেন, ‘ভোটের মাঠ সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে সেক্ষেত্রে বিজিবিকে সম্পৃক্ত করে কাজ করতে হবে। কারণ বিজিরির এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা রয়েছে।প্রত্যেক এলাকার মাস্তান, সন্ত্রাসীদের তালিকা করতে হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরী এবং ইসি সচিবইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কেপি