আওয়ার ইসলাম: আলনূর কালচারাল সেন্টার কাতারের উদ্যোগে বাংলাভাষা প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে গত ২৩ নভেম্বর দোহার বিন যায়েদ সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় ‘মাতৃভাষা ও ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা সভা।
আলনূর শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যাপক আবু শামার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন বাংলাদেশ কমিউনিটি কাতারের আহবায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন আকন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এরাবিয়ান এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপক নুরুল কবির আর প্রধান আলোচক ছিলেন আলনূর নির্বাহী পরিচালক মাওলানা ইউসুফ নূর।
আলোচনায় অংশ নেন আলনূর মহাপরিচালক প্রকৌশলী শুয়াইব কাসেম, আলনূর গবেষণা বিভাগীয় পরিচালক অধ্যাপক আমিনুল হক ও প্রকৌশলী বুলবুল আহমেদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেন মাওলানা নুরুল আমিন ও মাওলানা জসিমুদ্দিন মাশরুফ।
প্রধান অতিথি প্রবাসে মাতৃভাষা চর্চার মহৎ প্রয়াসের জন্য আলনূর সেন্টারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাংলাভাষা শিক্ষার আয়োজন করে আলনূর জাতীয় দায়িত্ব পালন করেছে।
তিনি বলেন, বাংলা আজ গৌরবের আসনে সমাসীন। বিভিন্ন দেশে এ ভাষা সমাদৃত হলেও কাতারে আমরা আজো বাংলাভাষাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। এক্ষেত্রে আলনূর সেন্টারের উদ্যোগকে সফল করার জন্য কমিউনিটির এগিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথি নুরুল কবির চৌধুরী মাতৃভাষার প্রতি অবহেলার ব্যাপারে আক্ষেপ করে বলেন, অসংখ্য প্রবাসী পরিবারের সন্তান মাতৃভাষা সম্পর্কে অজ্ঞ। অনেক অভিভাবক গর্ব করে বলেন, আমার সন্তানেরা ইংরেজি ছাড়া কথা বলে না। এটা আত্মঘাতী প্রবণতা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন অগ্রসর রাষ্ট্র। ১০ লক্ষ বিদেশি বাংলাদেশে কর্মরত। আমি মনে করি প্রবাসী সন্তানেরা মেধা ও প্রজ্ঞার সাহায্যে দেশের যোগ্য কর্ণধার হতে পারে। তবে এ জন্য তাদের বাংলাভাষা চর্চার বিকল্প নেই। আলনূর সেন্টার প্রবাসে মাতৃভাষার চর্চা ও দেশপ্রেমের উদাহরণ।
প্রধান আলোচক মাওলানা ইউসুফ নূর মাতৃভাষা চর্চাকে মহান ইবাদত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আল কুরআনের বর্ণনা মতে প্রত্যেক নবী-রাসুলগণ স্বজাতির ভাষায় প্রেরিত হয়েছিলেন। মহানবী সা. হলেন বিশুদ্ধ মাতৃভাষা চর্চার অনুপ্রেরণা ও মাতৃভাষার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রপথিক।
মদীনার সংখ্যালঘু ইয়াহুদিদের উপর রাষ্ট্রীয়ভাষা আরবি চাপিয়ে দেননি। বরং সাহাবি যায়েদ ইবনু সাবিতকে হিব্রুভাষা শেখার আদেশ করেন। তিনি মাত্র ১৩ দিনে হিব্রু ভাষা আয়ত্ব করে রাসুলের দোভাষী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
তিনি আরো বলেন, মাতৃভাষা বিমুখ প্রজন্ম শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না।
বাংলা প্রশিক্ষণ কোর্সের পরিচালক অধ্যাপক আমিনুল হক তার কোর্স নির্দেশনায় বলেন, কোর্সের সুফল লাভের জন্য শিক্ষকদের আন্তরিকতার পাশাপাশি অভিভাবকদের দায়িত্ব অপরিসীম। ঘরোয়া পরিবেশে বিশুদ্ধ বাংলাচর্চা কোমলমতি শিশুদের দারুন প্রভাবিত করে।
প্রকৌশলী শুয়াইব কাশেম বলেন, বাংলাভাষা চর্চা ও বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করা আলনূর সেন্টারের প্রধান মিশন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আলনূর এ লক্ষ্যে অবিচল ও তৎপর।
প্রকৌশলী বুলবুল আহমেদ বলেন, বাংলা প্রশিক্ষণ কোর্স আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। সন্তানদের মেধা ও প্রতিভার উন্নয়ন এবং তাদের মাঝে দেশপ্রেম সৃষ্টিতে এ কোর্স অনবদ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
দল বদলের কারণ জানালেন মধুপুরের পীর আল্লামা আবদুল হামিদ
আরআর