আব্দুল্লাহ আফফান: কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের কৃষক ইসমাইল হোসেন বাবুল (৪৮) সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাননি। তাঁকে খুন করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবেই। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে পিবিআই।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাত ২টার দিকে উপজেলার মনোহরগঞ্জ-হাসনাবাদ সড়কের দাদঘর গ্রামের রশিদ মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে একই উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের অলি আহাম্মদের ছেলে ইসমাইল হোসেন বাবুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তার বাঁ গালে আঘাতের চিহ্ন ছিল। শরীরের আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। স্থানীয় লোকজন ধারণা করে, বাবুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বাবুলের ভাই ইউনুছ মিয়ার অভিযোগ, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাকে দুর্ঘটনা বানিয়ে প্রথমে একটি সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরদিন তারা থানায় হত্যা মামলা করতে গেলেও পুলিশ সে মামলা নেয়নি। উল্টো হুমকি দিয়ে তাঁদের থানা থেকে বের করে দেয়।
ঘটনার পাঁচ দিন পর ওই বছরের ৩০ আগস্ট তার ভাবি মরিয়ম বেগম আদালতে ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ওই মামলা নিয়েও পুলিশ গা করেনি।
পরে ওই কৃষকের স্ত্রী পুলিশের দেওয়া সেই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি নারাজি আবেদন করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুমিল্লাকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
খোদ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল, কুমিল্লা জেলা পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওসমান গনিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।
পিবিআইয়ের তদন্তে বের হয়ে আসে সড়ক দুর্ঘটনায় নয়, পরিকল্পিতভাবেই খুন করা হয় কৃষক ইসমাইল হোসেন বাবুলকে। এর পর কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে এই খুনের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
গতকাল বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো—উপজেলা সদরের দিশাবন্দ গ্রামের আবুল কালাম ওরফে কালু মেম্বার, দুর্গাপুর গ্রামের বর্তমান মেম্বার আবদুল হক, একই গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও মো. সুমন।
এদের মধ্যে মেম্বার আবদুল হক ও ইসমাইল আদালতে বাবুলের স্ত্রীর দায়ের করা মামলার আসামি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার এসআই মো. শাহজাহান বলেন, সম্পত্তিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে আসামিদের কাছ থেকে এমনটাই জানা গেছে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের আরো বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
ভারতের ভিএইচপি ও বজরং দল জঙ্গি সংগঠন; জমিয়ত ধর্মীয় সংগঠন: সিআইএ
-আরআর