আওয়ার ইসলাম: বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যেতে গণ ফোরামের কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেছেন, বর্তমান সংবিধানিক কাঠামো ও ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যোগদান করতে আমরা নীতিগতভাবে রাজি।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন ড. কামাল হোসেন। সাক্ষাৎকারে তিনি এও বলেছেন, এ নিয়ে নবগঠিত জোটের শরীকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে তার কোনো কথা হয়নি। এটি শুধুই তার দলের অবস্থান।
‘এটা একটা সিম্পল প্রভিশন। আমি মনে করি সবাই এটা বলতে দ্বিধা করবেন না। তবে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত আমরা বসে নিইনি,’ বলেন ড. কামাল হোসেন।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ গঠনের ডাক দিয়েছেন কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা। রাজনৈতিক এ জোট গঠনের মূল উদ্যোক্তাদের একজন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
তার সঙ্গে বৃহত্তর জাতীয় এ ঐক্য প্রক্রিয়ায় রয়েছেন যুক্তফ্রন্টের বিকল্প ধারা বাংলাদেশের ডা. একিউএম বদরুদোজ্জা চৌধুরী, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরো অনেকে। এ প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনকারী বিএনপির সঙ্গেও।
সম্প্রতি মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত হয়ে ঐক্যের কথা বলেন। তবে ড. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, জামায়াতকে না ছাড়লে বিএনপির সঙ্গে জোট করবেন না তারা।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘বলা হচ্ছে, তারা যেগুলো আইনে আছে, এগুলো মেনে চলবেন। যদি দেখা যায় যে, তারা এখান থেকে সরে যাচ্ছেন বা কোনো প্রভাব ফেলার চেষ্টা করছেন।
তখন এটা দৃষ্টি এলে প্রথমেতো আপত্তি করা হবে যে, এটা থেকে আপনারা বিরত থাকেন। এরপরও অন্যপক্ষ যদি দেখেন যে রীতিনীতি না মেনে এটা করা হচ্ছে। তখন তো নির্বাচন বাতিল করার জন্য কোর্টে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, যারা সরকারে (নির্বাচনকালীন সরকার) থাকবে, নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে তাদের দায়িত্ববোধ থাকতে হবে।
‘বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ যারা আছেন, তারা যখন একটা স্বাক্ষর করবেন যে, আমরা কেউ এখানে হস্তক্ষেপ করবো না, আমরা এই প্রক্রিয়াকে একটা নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া হিসেবে হতে দেবো,তখন আমরা ধরে নিতে পারি সরকারের পক্ষে বা আমাদের পক্ষে যারা ওথ (শপথ) নিয়ে কথাগুলো বলবেন, তাদের তো ন্যূনতম একটা দায়িত্ববোধ থাকবে।’
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী বলেন, নির্বাচন কমিশন এটা রেফারি হিসেবে পরিচালনা করবে। কেউ যদি নিরপেক্ষতা থেকে সরে যায় তারা সেটা চিহ্নিত করবে এবং এটাকে অবৈধ বলবে। এগুলোতো ইলেকশন আইনেই আছে।
‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র ব্যানারে মহানগর নাট্যমঞ্চের ওই সমাবেশে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জোটের সদস্য গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন জানান, তাদের এই জোট কোন নির্বাচনী জোট নয়। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই শুধু তারা একজোট হয়েছেন।
‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জোট। যেকারণে এটা দ্রুত করা সম্ভব হয়েছে।’ জোট নিয়ে সরকার দলীয় থেকে আসা সমালোচনার বিষয়ে ড. হোসেন বলেন, উনাদের আশ্বস্ত করতে পারেন যে, এ রকম কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিল না। সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে এই জোট। সরকারও এই জোটে আসতে পারে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী ধরণের পূর্বশর্ত তারা সরকারকে দিচ্ছেন? এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ভোটার লিস্ট নিরপেক্ষভাবে করতে হবে। ভোটার লিস্ট অনুয়ায়ী সবার ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
ধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেবে আলেমরা
আপনার ব্যবসাকে সহজ করতে এলো বিসফটি – বিস্তারিত জানুন