আওয়ার ইসলাম: রাজধানীর বাড্ডার লিংক রোডের প্রিমিয়ার ব্যাংকের শাখার ম্যানেজারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা লুটের ঘটনার পাঁচ দিনেও ধরা পড়েনি অস্ত্রধারী সেই রহস্য মানব।
যিনি কিনা একাই গত সোমবার বিকেলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ব্যাংকের ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একটি ভল্টের ভেতরে আটকে রেখে ক্যাশ থেকে ২৩ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছেন বলে খবর রটেছে।
ওই দুর্বৃত্ত শুধু টাকাই লুট করেননি, যাওয়ার সময় সঙ্গে করে সিসিটিভি ক্যামেরার ডিভিআরও (ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার) নিয়ে গেছেন বলে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
পুলিশ বলছে, সশস্ত্র অবস্থায় একা একজন বাধাহীনভাবে ব্যাংকে প্রবেশ; ম্যানেজারসহ অফিসে কর্মরতদের ভল্টের ভেতরে আটকে রাখা; তার আগে শাখা ব্যাংকটির ম্যানেজার ফজলুল হকের সামনের চেয়ারে বসে ৪৫ মিনিট লুটেরার অবস্থান; ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা ও গ্রাহকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত যে নিরাপত্তারক্ষী তাদের একজনের কাছেও অস্ত্র না থাকার বিষয়টি রহস্যজনক।
তদন্তে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ওই ব্যাংকে ঘটনার দিন যারা কর্মরত ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভাষ্য, গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে একজন অস্ত্রধারী বাড্ডা লিংক রোডের গ/৮২ ও ৯০/১ ভবনের প্রিমিয়ার ব্যাংকের (শাখা) ভেতরে ঢুকে পড়েন।
এরপর সোজা তিনি ব্যাংক ম্যানেজার ফজলুল হকের কক্ষে যান। সেখানে ম্যানেজারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভল্ট রুমে ঢুকতে বলেন।
সবাই ভল্ট রুমে ঢোকার পর অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে ২৩ লাখ টাকা নিয়ে চলে যান। যাওয়ার সময় তিনি ব্যাংকের ভেতর থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিআর খুলে সঙ্গে নিয়ে যান। তার হাতে অস্ত্র থাকায় ভয়ে কেউই কোনও প্রতিবাদ করতে পারেননি।
ব্যাংক লুটের ঘটনার একদিন পর অর্থাৎ ২১ আগস্ট রাতে প্রিমিয়ার ব্যাংকের জেনারেল সার্ভিস ডিভিশনের সিনিয়র অফিসার রাহাত আলম বাদী হয়ে অচেনা একজনকে আসামি করে বাড্ডা থানায় মামলা (নম্বর- ১৮) দায়ের করেন।
এরপর নিরাপত্তারক্ষী আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ওই ব্যাংক ম্যানেজারসহ উপস্থিত সবাইকেই।
ওসি জানান, ঘটনার বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। ঘটনাটি থানা পুলিশ ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটের সদস্যরাও তদন্ত করছেন।
ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ না পাওয়া গেলেও ওই ব্যাংক ভবনের আশেপাশের অন্যান্য ভবন ও সড়কের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ঘটনার সময় ব্যাংকে উপস্থিত থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে অস্ত্রধারীর শারীরিক বর্ণনাও নেওয়া হয়েছে। এসব পর্যালোচনা করে অস্ত্রধারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় ব্যাংকের কারও সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে বলেও ওসি রফিকুল ইসলাম জানান।
আরো পড়ুন–
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে অংশ নিয়েছে ৬৩ হাজারের বেশি রুশ সেনা
প্রিয়নবির স্মৃতি বিজড়িত মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা
মসজিদে নববীর অদূরে ঐতিহাসিক ৩ মসজিদ
ব্যবসার হিসাব নিকাশ এখন হাতের মুঠোয়- ক্লিক
এটি/আওয়ার ইসলাম