আওয়ার ইসলাম: ভয়াবহ বন্যা হয়তো কেরালার মুসলিম জনগোষ্ঠীর ঈদের আনন্দকে ফিকে করে দিয়েছে কিন্তু তাদের ধর্মপ্রাণ মানসিকতাকে নয়। নিজেদের মসজিদ ডুবে গেছে বলে মন্দিরে নামাজ পড়লেন কেরালার একটি জেলার মুসলিমরা। সাম্প্রদায়িক সম্মিলনের এ চমৎকার ঘটনাটি ঘটেছে কেরালার ত্রিশুর জেলার কচুকাদুভু গ্রামের মুসলমানদের সাথে।
কেরালায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যায় কচুকাদুভু গ্রামের একটি মসজিদ। সেখানকার মুসলমানরা নামাজ পড়ার জন্য একটি জায়গা খুঁজছিলেন।
তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন শ্রী নারায়ণ ধর্মপালন যোগম নামক একটি ধর্মীয় দাতব্য সংস্থা। তার তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন পারুপপুল্লিক্কাভু রত্নেশ্বরী মন্দিরের একটি হল মুসলমানদের পবিত্র ঈদের নামাজ পড়ার জন্য ছেড়ে দেয়। মন্দিরটি কেরালার মালার নিকটবর্তী ইরাভাথুর নামক একটি গ্রামে অবস্থিত।
শুধু তাই নয়, নামাজ পড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি এই ২০০ মুসলমানদের পানি এবং খাদ্যেরও ব্যবস্থা করে দেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ।
চরম বিপদের মুহূর্তে এরকম সাম্প্রদায়িক সম্মিলনের ঘটনা নাড়া দিয়েছে সবাইকে। ভারতসহ সারা বিশ্বের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ঈদের নামাজ পড়ার এই ছবিকে ভাইরাল করে দিয়েছেন।
কেরালা বন্যা: মসজিদে আশ্রয় পেল হিন্দুরা
শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যা আক্রান্ত ভারতের কেরালা রাজ্যে সম্প্রীতির অনন্য নজির দেখালেন মুসলিমরা। দুর্গত হিন্দুদের জন্য খুলে দিলেন মসজিদের দরজা। আশ্রয় পেল মানুষ।
মালাপ্পুরম জেলার ছালিয়ার গ্রামের মসজিদটি পরিণত হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। উল্লেখ্য, সেই মসজিদে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু।
বন্যায় কেরলের ১৪টি জেলা প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডুবে গিয়েছে ঘরবাড়ি। ভেসে গিয়েছে সংসার। প্রাণ হারিয়েছেন চারশোর বেশি মানুষ। গৃহহীন ১৪ লক্ষ। ত্রাণ শিবিরই এখন তাঁদের ঠিকানা।
ছালিয়ার গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান পি টি উসমান বলেন, ‘জুমা মসজিদে ২৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তাঁদের অধিকাংশ হিন্দু। ৮ আগস্ট মসজিদে ত্রাণ শিবির খোলা হয়। আশ্রয়হীন মানুষকে আশ্রয় দেওয়ায় যেকোনও ধর্মের মূল কথা।’
নানা ভাষা, নানা মতের ভারতে বর্তমানে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা চরমে পৌঁছেছে। সেই পরিস্থিতিতে কেরালার এই চিত্র যেন সমগ্র ভারতকে বার্তা দিল।
ব্যবসার হিসাব নিকাশ এখন হাতের মুঠোয়- ক্লিক
আরএম/