আওয়ার ইসলাম: চলতি বছরের ১৮ জুন ভারতের উত্তরপ্রদেশের হাপুরে গরু চুরির অভিযোগে কাশেম কোরেশি নামে ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কাশেমের সঙ্গী সমীউদ্দিন নামে আরেক ব্যক্তিকেও বেধড়ক মারপিট করা হয়।
কাশেম কোরেশিকে হত্যার মামলায় অন্যতম রাকেশ। তবে আদালতে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানিয়েছিলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন। এমনকি ঘটনার সময় তিনি সেখানে উপস্থিতই ছিলেন না।
নিজের এ বক্তব্যের আদালত থেকে জামিন পান রাকেশ। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।
কিন্তু রাকেশ আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার নিজের এক কথোপকথন গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। যেখানে যে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তার ওই কথোপকথন রেকর্ড হয়েছে দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম এনডিটিভির গোপন ক্যামেরায়।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাকেশ বলছেন, ‘ওরা গরু কাটছিল। আমি ওদের কেটে ফেলেছি।’
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলার বাজেখুর্দ গ্রামের বাসিন্দা রাকেশ। সম্প্রতি এনডিটিভির একটি প্রতিনিধিদল সেখানে গিয়েছিল। গোপন ক্যামেরায় রাকেশের স্বীকারোক্তি রেকর্ড করা হয়।
এনডিটিভির গোপন ভিডিওতে রাকেশ বলছেন, ওরা গরু মেরেছে, আমরা তাই ওদের খতম করেছি। এই প্রথম জেলে গেলাম। স্বাভাবিকভাবে ভয় পাওয়ার কথা। কিন্তু আমি ভয় পাইনি। জেলে গিয়েও বেশ হইচই করেছি জেলারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য।
রাকেশ এটাও জানান, তার একটা গোটা ফৌজ রয়েছে। হুমকির সুরে তাকে বলতে শোনা যায়, কেউ যদি গরু কাটে, আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওদের কেটে ফেলব। এ জন্য যদি হাজার বার জেল খাটতে হয়, তাতেও তিনি রাজি!
পুলিশ প্রশাসন সঙ্গে আছে বলেই যে এ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে, সেটাও জানান রাকেশ। তাকে বলতে শোনা যায়, পুলিশ সরকারের। আর সে কারণেই এ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। আজম খান ক্ষমতায় থাকলে কি এসব সম্ভব হতো! মোটেও না।
কীভাবে কাশিমকে মেরেছেন সেটাও জানিয়েছেন রাকেশ। মারের পর মার চলছিল। আশপাশে ভিড় জমেছিল বেশ। তাদের মধ্যে থেকেই কেউ বলেন, কাশিমকে একটু জল দিতে। কিন্তু না, কাশিমকে জল দেয়া হয়নি সে সময়। উল্টো বলা হয়েছিল, গরুকে মারার সময় জল দিয়েছিস? তুইও জল পাবি না। মারতে মারতে শেষে মরেই যায় কাশিম! সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
আরও পড়ুন: সৌদির সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা বন্ধের ঘোষণা মাহাথির সরকারের
আরএম/